রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী

 নিজস্ব প্রতিনিধি:  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ এখানে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। নোবেল বিজয়ী বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথের ১৫৪তম জন্মবার্ষিকীতে এই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হলো।

প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পর্যায়ে বিশ্বকবির জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে শাহজাদপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

তিনি বলেন, ‘আজকের দিনটি শাহজাদপুরের মানুষের জন্য খুবই আনন্দের দিন। কারণ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হতে যাচ্ছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, এই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠার জন্য সিরাজগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। এ অঞ্চলে উচ্চশিক্ষা বিস্তারে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে রবীন্দ্র গবেষণা ও চর্চার পাশাপাশি সাহিত্য, সঙ্গীত, নাট্যকলা, নৃত্য ও চারুকলা, সামাজিক বিজ্ঞান, কৃষি, সমবায়, জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে  স্নাতক ও  স্নাতোকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষা দেয়া হবে।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে ‘সভ্যতার সংকট ও রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমেরিটাস আনিসুজ্জামান।

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ও স্থানীয় সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপন।

এছাড়া সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আখতারী মমতাজ ও সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক বিল্লাল হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ভূখন্ড ও এর মানুষের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের ছিল আত্মিক সম্পর্ক। রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনের এক বিশেষ পর্বে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, নওগাঁর পতিসর ও কুষ্টিয়ার শিলাইদহে জমিদারি দেখাশোনার জন্য অবস্থান করেছেন। তিনি অন্য জমিদারদের মতো শুধু প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করে কোষাগার স্ফীত করেননি। বরং তিনি তৎকালীন পূর্ববঙ্গের সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশায় ব্যথিত হয়ে এর কারণগুলো গভীর মনোযোগ দিয়ে উপলব্ধির চেষ্টা করেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এসব চিন্তা থেকেই রবীন্দ্রনাথ কৃষি আধুনিকায়ন, কৃষি ব্যাংকিং ও বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। এসব কর্মকা-ের সাফল্য ও বিস্তৃতির জন্য তিনি তাঁর পুত্র রথীন্দ্রনাথ ও জামাতা নগেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলীকে কৃষি এবং বন্ধু পুত্র সন্তোষচন্দ্র মজুমদারকে পশুপালন বিষয়ে শিক্ষার জন্য আমেরিকা পাঠান।

তিনি বলেন, আধুনিক চাষাবাদের মাধ্যমে কৃষি বিপ্লবের ক্ষেত্র হিসেবে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববাংলাকে বেছে নেন। তিনি এ অঞ্চলে নিজের সাড়ে ৪ হাজার বিঘা জমি গোচারণ ভূমি হিসেবে কৃষকদের দান করেন। এর উপর ভিত্তি করে শাহজাদপুরে গড়ে উঠে দুগ্ধ খামার, যা মানুষের আয়-উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টি করে। এছাড়া মৎস্য চাষের জন্য তিনি দীঘি ও পুকুর খনন করেন। গরীবদের মাঝে নগদ অর্থ সাহায্যের পাশাপাশি বিনা পয়সায় ওষুধও বিতরণ করেন।

Comments (0)
Add Comment