সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে ভাষণ দান করেন, হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক মসীহ উর রহমান, হেযবুত তওহীদ ও বজ্রশক্তির সাহিত্য সম্পাদক মো. রিয়াদুল হাসান, দৈনিক বজ্রশক্তির সম্পাদক ও প্রকাশক এবং হেযবুত তওহীদের প্রচার সম্পাদক এস. এম সামসুল হুদা, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শামীম আহমেদ এবং সমাজকর্মী ফয়সাল আহমেদ অ্যাপোলো।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, জঙ্গিবাদকে ইস্যু করে একের পর এক মুসলিম দেশগুলোতে আগ্রাসন চালানো হচ্ছে। একদিকে এসব ভুখন্ডে উগ্রগোষ্ঠী গুলোকে মদদ দিয়ে মানবতাবিরোধী কাজে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে তাদের সেই মানবতাবিরোধী কর্মকান্ডকে ইস্যু করে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে বিশ্বের মুসলিম ভূখন্ডগুলো। বাংলাদেশকে ঘিরেও বর্তমানে একই ধরনের দেশি-বিদেশি চক্রান্ত ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান সঙ্কট থেকে জাতিকে বাঁচাতে হলে সকল প্রকার অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে ও ন্যায়ের পক্ষে জাতীয় ঐক্য গঠনের যে কোনো বিকল্প নেই- সে বিষয়ে একমত পোষণ করেন অতিথিরা। তারা হেযবুত তওহীদের এই জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
প্রধান বক্তার ভাষণে হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, একদল ধর্মব্যবসায়ী স্বার্থান্বেষী মহল হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে নানা রকম অপপ্রচার ও মিথ্যাচার প্রচার করে থাকে। তারা নিজেরাও বিভিন্ন দলে-উপদলে বিভক্ত হয়ে আছে এবং তাদের মতবাদ দ্বারা জনগণের মধ্যেও বিভেদ তৈরি করেছে। কিন্তু আপনারা তাদের কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। আল্লাহ কোরআন নাজেল করার ধারাবহিকতায় প্রথম যে শব্দটি মানব জাতির জন্য পাঠিয়েছেন সেটি হচ্ছে ‘পড়’, মানে ‘জানো’। আপনারদেরকে আহবান জানাই, হেযবুত তওহীদের বিষয়ে জানুন; অযথা না জেনে আমাদের বিষয়ে ভুল বুঝবেন না, প্রতারিত হবেন না। খেয়াল রাখতে হবে, আমাদের ধর্মবিশ্বাসকে কেউ যেন ভুল খাতে, নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহার করতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, সমস্ত দুনিয়া আজ যুদ্ধের অস্ত্রে শান দিচ্ছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন যে কোনো মুহূর্তে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে যেতে পারে। মানুষ এখন বিনাশ হওয়ার অপেক্ষায় আত্মসমর্পণ করে আছে। অন্যদিকে আমাদের এই মুসলমান নামক জাতির অবস্থাও করুণ। এই মুহূর্তে সাড়ে ছয় কোটি মুসলমান উদ্বাস্তু; তারা রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করছে, দিন যাপন করছে, রাত্রি পার করছে। ইরাক ধ্বংস করা হলো, সিরিয়া ধ্বংস করা হলো, আফগানিস্তান মাটির সাথে মিশে গেল, লিবিয়া গণকবরে পরিণত হলো, ইয়েমেনে দুর্ভিক্ষ চলছে, আফ্রিকায় না খেয়ে মারা যাচ্ছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে দশ লক্ষ মুসলমানকে বাড়িঘর ছাড়া করা হয়েছে। সারা পৃথিবীতে মুসলমানরা ১৫০ কোটি। আমাদের লক্ষ লক্ষ আলেম, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বুজুর্গ, দরবেশ, পীরের অনুসারী রয়েছে- কিন্তু সমস্ত জায়গায় আমরাই মার খাচ্ছি।
বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে নিতে বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম। তারপর গত ছিচল্লিশ বছর একটি দিনের জন্যও ঐক্যবদ্ধ থাকতে দেওয়া হয়নি। একটি ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণি মানুষের ধর্মবিশ্বাসকে উস্কে দিয়ে দাঙ্গা লাগিয়েছে, স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক গোষ্ঠী স্বার্থের রাজনীতি, হানাহানি, রক্তারক্তি করে, বিভেদ সৃষ্টি করে আমাদের জাতিটাকে পঙ্গু বানিয়ে রেখেছে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোও সেই সুযোগ নিচ্ছে।
সমাবেশের শুরুতে সঙ্গীত পরিবেশন করে তওহীদ সাংস্কৃতিক দলের সদস্যরা। পরে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জনাব রমজান আলী। অত:পর অনুষ্ঠানের সভাপতি ঢাকা মহানগর হেযবুত তওহীদের সভাপতি মো. আলী হোসেনের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান শেষে সমাপনী বক্তব্য রাখেন দৈনিক বজ্রশক্তির সম্পাদক ও হেযবুত তওহীদের প্রচার সম্পাদক এসএম সামসুল হুদা।