মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের চৌরাশি গ্রামে সোমবার রাতে স্বেচ্ছাশ্রমে কামারের খালে বাঁধ নির্মাণ করেছে এলাকাবাসী। এতে রাজৈর ও কোটালীপাড়া উপজেলার প্রায় ১০ হাজার একর জমির ফসল তলিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
সরেজমিন এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, কামারের খালটি কৃষক মারার ফাঁদ নামে পরিচিত। খালটি উপজেলার সাধুর ব্রীজ এলাকায় কুমার নদ থেকে বেড়িয়ে বাজিতপুর-চৌরাশির ভিতর দিয়ে কোটালীপাড়ার বুলকির বিলে গিয়ে মিশেছে। বর্ষাকালে কুমার নদের পানি এই খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে কোটালীপাড়ার লাউয়ের বিল,বুলকির বিল,রাজৈরের ফুল পুকুরিয়ার বিল, বাঘিয়ার বিল সহ আশেপাশের ১০ হাজার একর জমির ইরি-বোরো ধান, তরমুজ ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে যায়। গত ৩-৪ দিন অবিরাম বৃষ্টির কারনে খালে পানি বেড়ে ফসলী জমিতে ঢুকতে শুরু করেছে। ফসল রক্ষার জন্য চৌরাশি গ্রামের উত্তর পাড়ায় এলাকাবাসী নিজেদের জমি থেকে মাটি কেঁটে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মানের জন্য সোমবার রাতে মাইকিং করে । এখবর ছড়িয়ে পড়লে ঐ গ্রামের প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ লোক স্বেচ্ছায় বেড়িয়ে আসে এবং বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে। সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রাত ১২ পর্যন্ত কাজ করে নির্মাণ কাজ শেষ করে। চৌরাশি গ্রামের কবি ও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব নির্মলানন্দ বিশ^াস জানান, প্রতি বছর ফসল তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের জমির আইলে বসে কান্নাকাটি করতে দেখা গেছে। এবার বর্ষার শুরুতেই সকলের চেষ্টায় কৃষক মারার ফাঁদ কামারের খালে বাঁধ নির্মাণ করা সম্ভম হয়েছে। ইউপি সদস্য নেপাল ভক্ত জানান, এলাকার কৃষকদের দুঃখের কথা বিবেচনা করে শংকর বৈদ্য, জতিন ভক্ত, আশুতোষ মাষ্টার, তন্ময় বেপারী, বিজয় মন্ডল, জয়রাম করাতীর নেতৃত্বে ২৫০ থেকে ৩০০ লোক স্বতস্ফুর্তভাবে বাঁধ নির্মাণের কাজ সমাপ্ত করেছে। এতে কৃষকের মুখে হাসি ফুঁটেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম হাওলাদার জানান, ইতোপূর্বে ২ বার কামারের খালে বাঁধ নির্মান করা হয়েছিল। পানির প্রবল চাপে ভেঙ্গে গেছে। সোমবার রাতে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি কেটে বাঁধ নির্মাণ করে বাঁশ ও গাছ দিয়ে সেটা রক্ষনাবেক্ষনের ব্যবস্থা করেছে । এতে এই অঞ্চলের প্রায় ৫ লক্ষ মণ ধান ও প্রচুর পরিমান সবজি রক্ষা পাবে।