রাণীশংকৈলে পানকৌড়ি পাখির অভয়াশ্রম

আনোয়ার হোসেন আকাশ, রাণীশংকৈল: ঠাকুরগাওয়ের রাণীশংকৈলে পানকৌড়ি পাখির অভয়াশ্রম গড়ে উঠেছে। সাইবার অঞ্চলে প্রচন্ড শীতের প্রকোপ থেকে দুরে থাকার জন্যই এসব পাখি বাঁচর তাগিদে জীবন রক্ষার জন্য দুর দুরান্ত থেকে ছুটে আসে। রাণীশংকৈল-কাঠালডাঙী প্রধান সড়কে কেউটান গ্রাম। অনেক দিন আগের শিমুল গাছ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। গাছের চারপাশ’র ডাল ঘিরে পানকৌড়ি পাখি। ব্যস্ত সড়কের পাশেই শিমুল গাছিটি লোকালয়ে প্রকৃতির শোভা ছড়িয়ে আছে। সাবা দিন রাত লোক সমাগম থাকলেও এটিকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বেছে নিয়েছে পাখিগুলো। প্রতিদিন সকাল হলে আহারের খোজে ছুটে যায় যে যার মতো। আহার শেষে রাত্রী যাপনের জন্য আবার তারা এই শিমুল গাছে ফিরে আসে। শিমুল গাছের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে কুলিক নদী। এক অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিরাজ করছে এখানে। শুধু তাই নয় নদীর কিনার জুড়ে কাশ বন। যখন সাদা ফুলগুলো তাদের রূপ ছড়িয়ে আরো সৌন্দর্যমন্ডিত করে তোলে পুরো এলাকা। যদিও বর্ষাকাল শেষ হলেই কুলিক নদী তার যৌবন অনেকটা হারিয়ে ফেলে তবুও সৌন্দর্যের কমতি থাকেনা। আহার করে পাখিগুলো যখন গাছে এসে আবার এক সাথে মিশে যায়। তখন একত্রিত হওয়ার আনন্দ যেন তাদের বিমোহিত করে তোলে। নিজেদের ভাষায় ডাকাডাকি করতে থাকে। তাদের ডাক শুনে এলাকাবাসি সত্যি খুব আনন্দ পায়। মুগ্ধ হয়ে যায় সকলে। এলাকাবাসির কাছে পাখিগুলো অতিথি পাখি নয়, যেন তাদের পরিবারের সদস্য হয়ে পড়েছে। নিজ পরিবারের সদস্যদের মতো এরাও এলাকার প্রতিটি মানুষের কাছে আপনজন হয়ে উঠেছে। পড়ন্ত বৈকাল রাস্তার পাশে মোটরসাইকেল রেখে পাখিগুলোর ছবি তোলার জন্য গাছের দিকে এগুতেই কেউটান গ্রামের সুভাসের কন্ঠে ভেসে উঠল স্যার পাখি মারতে দিব না। যেন হোঁচট খেয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। মনে মনে ভাবতে লাগলাম এ কি প্রেম, একি ভালবাসা। পাখির প্রতি মানুষের এত মায়া এত ভালবাসা সত্যি প্রশংসনীয়। সামনে এগুতেই আবার বলে বসল স্যার পাখি মারতে দিবনাতো ! আমি মুচকি হেসে বললাম, না ভাই পাখি মারবনা আপনাদের এই প্রিয় পাখিগুলোর ছবি তুলব তা দিবেনতো ! মাথা নেড়ে সায় দিল যান। আলাপকালে এলাকাবাসি ক্ষোাভের সাথে বলেন, সরকারি দলের লোকজন অনেক সময় বন্ধুক নিয়ে পাখি মারতে আসে আমরা বাধা দিলে তাদের সাথে বাক বিতন্ডা হয়। বাইরের লোকজনও আসে পাখি মারতে কিন্তু আমরা তা হতে দেয়না। কেউ যদি কথা না শুনে তখন আমরা থানায় ফোন করি। কেউটান গ্রামের রইসউদ্দিন (৮২) জানান, প্রতি বছর পাখিগুলো এখানে আসে। সারাদিন আহার শেষে শিমুল গাছে আশ্রয় নেয় রাত কাটায়। পাখিগুলো এলাকার মানুষের কাছে খুব প্রিয় হয়ে গেছে। বিডিপত্র/আমিরুল

Comments (0)
Add Comment