রাহেবুল ইসলাম টিটুল লালমনিরহাট
কোন সিনেমা কিংবা নাটক নয়, বাস্তব ঘটনা। নাটক কিংবা সিনেমায় অনেক অবাস্তব জিনিস দেখানো হয় যেটা বাস্তব জীবনে সম্ভব নয়। বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। এমন সংকট মুহূর্তে মানুষকে সাহায্য করার জন্য বাস্তবেই সমাজের অবহেলিত- অসহায়,দিনমজুর, কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন কালীগঞ্জ থানা পুলিশ।
কালীগঞ্জে দিনে তালিকা তৈরি করেন কর্মহীন মানুষের আর রাতে ত্রাণ নিয়ে বাড়ি বাড়ি হাজির হন কালীগঞ্জ থানার ওসি আরজু মোঃ সাজ্জাদ ও তার পুলিশ বাহিনী । দরজায় ডাক দিয়েই হাতে ধরিয়ে দেন ত্রাণের ব্যাগ।
যাদের ঘরে খাবার নেই, কিন্তু কাউকে আবার বলতে পারছেন না। এমন কর্মহীন মানুষগুলো রাতের আঁধারে ত্রাণ পেয়ে বেশ আনন্দিত।
কালীগঞ্জ উপজেলার কাশীরাম এলাকার গৃহিণী
হাসিনা বেগম জানান, স্বামী ছেড়ে গেছেন। এখন কোনো কাজও নেই। সন্তানদের নিয়ে বেশ কষ্টে। এ অবস্থায় ঘরে খাবার নেই। কিন্তু সে কথা কাউকে বলতেও পারছি না। আবার মান হারানোর ভয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণও নিতে পারছি না।
তিনি বলেন, সবাই ত্রাণ দিয়ে ছবি তুলতে চায়। এবার প্রথম ত্রাণ পেলাম। এভাবে খবর নিয়ে যদি সবাই রাতে ত্রাণ দিত তবে দেখা যেত আমার মতো অনেক নিম্নমধ্যবিত্ত অসহায় মানুষ যে কত কষ্টে আছে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি পু জানান, মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত অসংখ্য পরিবার এখন অনেক কষ্টে আছেন। বিশেষ করে চাবিক্রেতা বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তারা কারও কাছে বলতে পারছেন না। আবার প্রকাশ্যে গিয়ে ত্রাণও নিতে পারছেন না।
তিনি বলেন, তাদের কষ্টের কথা চিন্তা থেকেই দিনে এলাকাভিত্তিক তালিকা তৈরি করি। আর রাতে তাদের বাড়িতে নীরবে ত্রাণ পৌঁছে দেই। দরিদ্ররা বিভিন্নভাবেই ত্রাণ পাচ্ছেন। কিন্তু এখন তাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এবং কালীগঞ্জ থানার ওসি আরো বলেন,
পুলিশ সব সময় মারবতার সেবায় নিয়োজিত থাকে। তাই কালীগঞ্জ থানা পুলিশ এগিয়ে এসেছে তা অব্যাহত থাকবে।
খাদ্যসামগ্রী বিতরনকালে কালীগঞ্জ থানার ওসি আরজু মোঃ সাজ্জাদ বলেন, বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাহিরে বের হবেন না। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সকলকে সরকারী নির্দেশনা মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সবাইকে ঘরে থাকার আহবান জানান।