মিলন কবির, শার্শা প্রতিনিধি: মহান ২১শে ফেব্রুয়ারী আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে ও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যশোরের শার্শা উপজেলায় ৯২ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শহীদ মিনার নেই। ১৯৯৯ সালে ইউনস্কো কর্তৃক শহীদ দিবসকে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা হিসাবে স্বীকৃতির পর থেকেই প্রতিবছর সারাবিশ্বে পালিত হয় এই দিবসটি। তবে শার্শায় ভাষা দিবসটি পালিত হয় অনেকটা দায়সারার মত। কলেজ, মাদ্রাসা ও প্রাইমারী স্কুলগুলোতে দিবসটি পালিত হয় দোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। তৃণমুল পর্যায়ের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার গড়ে না ওঠায় গুরুত্ব হারাচ্ছে দিবসটির। শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে ও বরণে। ফলে নানা ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে ভাষাপ্রেমী মানুষের মাঝে। সুর্বনখালী সরকারি প্রাইমারি শিক্ষিকা শামিমা সুলতানা বলেন, শার্শা উপজেলায় ৯০ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শহীধ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরা শ্রদ্ধা ও স্মরণ করতে পারে না ভাষা শহীদদের। শার্শার গোগা মাদ্রাসার সুপার মোঃ ইসাহক আলী, জামতলা ফাজেল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা একই অভিযোগ করেন এই প্রতিনিধির সাথে। এ ব্যাপারে সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন তারা। শার্শা ও বেনাপোল রয়েছে প্রায় তিনশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ১২৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর মধ্যে শহীদ মিনার আছে ১৩টি। ৩৫টি হাই স্কুল ও ৩২টি মাদ্রাসার মধ্যে ২৮টি মাদ্রাসায় কোন শহীদ মিনার নেই। ১২টি কলেজের মধ্যে ১০টিতে কোন শহীদ মিনার নেই। তাই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনসহ কোন ব্যক্তি উদ্যোগে গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শহীদ মিনার নির্মান না হওয়ায় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারে না শিক্ষার্থীসহ এলাকার সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শার্শা উপজেলা মিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রব বলেন, ১২৬টি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৩টিতে কোন শহীদ মিনার নেই। এজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দ্রুত শহীদ মিনার নির্মান দরকার। ইতিমধ্যে উপজেলার জামতলা ডি.এস.টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় শহীদ দিবস পালনের বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। প্রধান শিক্ষক মোঃ হবিবর রহমান বলেন, সব প্রতিষ্টানগুলোতে যদি শহীদ মিনার থাকতো তাহলে ভাষার গুরুত্ব ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান, দোয়া ও আলোচনা সভা সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়তো। শার্শা উপজেলা মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আশিকুজ্জামান বলেন, অধিকাংশ হাই স্কুলে শহীদ মিনার নির্মান করা হলেও স্কুল মাদ্রাসা গুলোতে শহীদ মিনার গড়ে উঠেনি। তৃণমূল পর্যায়ে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের গুরুত্ব ছড়িয়ে দিতে ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ভালাবাসা জানাতে সব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করার প্রয়োজন বলে তিনি জানান। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শার্শার উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মান করা হোক এ দাবি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের মানুষের।