ঠাকুরগাঁও: ১৮ মাস বন্ধের পর আজ রবিবার খুলেছে ঠাকুরগাঁয়ের রাণীশংকৈলে ২২৬ টি স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসা।এছাড়াও খুলেছে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোও । এ কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দেখা গেছে উৎসবের আমেজ। শিক্ষক ও কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের স্কুলগুলোতে স্বাস্থবিধি মেনে প্রবেশ করছে। প্রাণোচ্ছল রুপ ফিরে পেয়েছে শিক্ষাঙ্গন।
তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস থাকলেও কোনো কোনো অভিভাবকের মধ্যে ভর করেছে আতঙ্কও। করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসেছে শিক্ষার্থীরা। অনেক শিক্ষার্থী; যারা নতুন ভর্তি হয়েছে, তাদের জন্য আজই স্কুল-কলেজের প্রথম দিন।
উপজেলার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফটক নতুন করে সাজানো হয়েছে। কোনো কোনো স্কুল কলেজে করতালি দিয়ে ফুল দিয়ে মিষ্টিমুখ করিয়ে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়ার দৃশ্য চোখে পড়েছে ।
উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য ১৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল। সে আলোকই প্রস্তুত করা হয়েছে স্কুল কলেজ গুলো।
তবে স্কুল খুললেও কোনো অ্যাসেম্বলি হবে না। পড়াশোনায় কোনো চাপও থাকবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দুই মাসের মধ্যে কোনো ধরনের মূল্যায়ন ও আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা না নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।
রাণীশংকৈল কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু শাহান শাহ জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জ্বর মাপার জন্য থার্মোমিটার, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ প্রয়োজনীয় উপকরণও রাখা হয়েছে। অনেকদিন পর শিক্ষার্থীর পেয়ে আনন্দে পরিপূর্ণ মনে হয়েছে শিক্ষাঙ্গন।
বিদ্যালয়ে আসা শিক্ষার্থীরা জানায়, দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয় আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে তাদের।
বিদ্যালয়ে আসা এক অভিভাবক জানান, বন্ধের সময় বাড়িতে ছেলে-মেয়েদের তেমন লেখাপড়া হয়নি। শিক্ষাক্ষেত্রে তারা অনেক পিছিয়ে পড়েছে। অল্প সময়ে পরীক্ষার পুরো প্রস্তুতি নিতে পারবে কি-না এ নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।
তনিকা তাবাসসুম তনি নামে এক শিক্ষার্থী বলে, ‘আমাদের মতো যারা বেসরকারি স্কুল-কলেজে তাদের তো বকেয়া বেতন সবই নিয়ে নিয়েছে। করোনাকালে করুণ অবস্থায় কেটেছে মানুষের জীবন। এর মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের আর বেতন নিয়ে পরিবারের বাড়তি দুশ্চিন্তাও রয়েছে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলী শাহরিয়ার বলেন, সবাইকে মাস্ক পরে স্কুলে আসার নির্দেশনা রয়েছে। আবার মাস্ক পরার কারণে কোনো শিশু শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে কি না, সে বিষয়েও শিক্ষকদের দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে সরকারের ১৯ দফা নির্দেশনা মতে রাণীশংকৈল উপজেলার ৬ কলেজ, ৫০ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৪টি মাদ্রাসা ও ১৫৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরোপুরিভাবে খুলেছে। ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসতে পেরে খুব খুশি।
আনোয়ার হোসেন আকাশ/ঠাকুরগাঁও