শৈলকুপা থানার এএসআই আজাদ হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে কাজল মন্ডলকে তিনি গাজাসহ শৈলকুপার ভাটইবাজার থেকে আটক করে থানা হাজতে রাখেন। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে হাজত খানার বাথরুমে গলায় লুঙ্গি নিয়ে কাজল আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
তবে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, মৃত কাজল মন্ডল একজন মাদকসেবি, তার নামে কুষ্টিয়ার ইবি থানায় মাদকদ্রব্য আইনের একটি ওয়ারেন্ট ছিল। সেই মামলায় গতরাতে অভিযান চালিয়ে তার বাড়ী থেকে ২০ পুড়িয়া গাজাসহ গ্রেফতার করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে আনলে সে মারা যায়। কিন্তু কেন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে তা ওসি জানাতে পারেননি।
শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফাহমিদা হক জানান, শুক্রবার সকাল ১১ দিকে পুলিশ কাজল নামে এক রোগীকে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। এসময় কাজল মন্ডল খুবই মুমুর্ষ ছিলেন। তাকে দ্রুত ইমারজেন্সি ভর্তি রেজিষ্টারে ৩৫৪২/১৮ নম্বর সিরিয়ালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্ত রোগীর হার্টবিট কম থাকায় তাকে দ্রুত ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরুরী বিভাগের রেজিষ্টারে হ্যাংগিং রোগীর কথা উলেখ আছে।
এদিকে দুপুর ১২টার দিকে কাজল মন্ডলকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ শারমিন আহম্মেদ তাকে মৃত ঘোষনা করেন। ডা. শারমিন আহম্মেদ জানান, অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরো জানান, লাশের শরীরে আত্মহত্যার কোন চিহ্ন বা আলামত নেই। ময়না তদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না। তিনি জানান, এমনও হতে পারে কোন আঘাতে আভ্যন্তরীন ক্ষত সৃষ্টির কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে কাজল মন্ডলের আত্মহত্যার খবর, স্থান ও মৃত্যুর সময় নিয়ে ওসি মহিবুল এবং এএসআই আজাদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকের ধারণা নির্যাতনের ফলে কাজল মন্ডলের মৃত্যু হয়। বিষয়টি পুলিশ ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ জানান, মৃত্যুুর ঘটনায় অতিরিক্ত পলিশ সুপার (এসবি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদারকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট উত্তম কুমার রায় লাশের সুরতহাল করেছেন।
নিহত কাজলের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার ইবি থানার রাজাপুরে যোগাযোগ করে জানা গেছে, তিনি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। তার বাবা জুলহক মন্ডল ছেলের কোন খোজখবর রাখতেন না। তবে শৈলকুপা থানায় কাজলের বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই ।