কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : এবছরও কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদ-উল ফিতরের নামাজ আদায়ের জন্য লাখো মুসল্লির ঢল নামে। এবছর অনুষ্ঠিত হয় ঈদ-উল ফিতরের ১৮৮তম জামাত।
শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা শোলাকিয়া ঈদগাহে আসতে শুরু করেন। তারা ঈদগাহ সংলগ্ন এবং শহরের বিভিন্ন মসজিদে অবস্থান নেন। অনেকেই মাঠেই রাত কাটাবেন বলে পাটি কিংবা চাদর বিছিয়ে মাঠেই অবস্থান গ্রহণ করেন। তবে কিছুটা বাধ সাধে বৃষ্টি। শুক্রবার রাত এগারোটার পর থেকে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। ভিজে যায় মাঠ। কোন কোন স্থানে পানি জমে থাকে।
কিন্তু ভোরের দিকে বৃষ্টির আশঙ্কা কেটে যাবার পর থেকেই মুসল্লিরা মাঠে আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঈদগাহমুখী সকল সড়কে জেলা শহর ও আশেপাশের বিভিন্ন উপজেলা এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের ঢল নামে। মুসল্লিদের এই ঢল অব্যাহত থাকে নামাজ শুরু হওয়ার পূর্বক্ষণ পর্যন্ত।
দশটায় নামাজ শুরু হলেও সকাল নয়টার মধ্যেই মাঠ কানায় কানায় ভরে যায়। দূর-দূরান্তের মুসল্লিরা বাস, মাইক্রেবাস, সিএনজি, টমটম প্রভৃতি ভাড়া করে আসেন। ভিড় এড়ানোর জন্য শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথে এইসব যানবাহন আটকে দেয়া হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ঈদের দিন সকালে ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে দুটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করে। ঈদের দিন ভোরে ট্রেন দুটি যথাক্রমে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে ছেড়ে কিশোরগঞ্জ পর্যন্ত আসে এবং নামাজ শেষে মুসল্লিদের নিয়ে স্ব স্ব গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
কড়া নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে বিভিন্ন প্রবেশ মুখ দিয়ে মুসল্লিরা মাঠে প্রবেশ করেন। র্যাব, আর্মড পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর নিরাপত্তাকর্মীরা সারা মাঠ জুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। প্রধান প্রবেশ গেইটে পুলিশ মেটাল ডিটেক্টর নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন।
দশটা বাজার ঠিক পনের মিনিট আগে তিনটি, পাঁচ মিনিট আগে দুটি এবং এক মিনিট আগে এক রাউন্ড বন্দুকের গুলি ছুঁড়ে মুসল্লিদের নামাজের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য সংকেত দেয়া হয়। এবছর ঈদ-উল ফিতরের জামাতে ইমামতি, খুৎবা পাঠ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ।
ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে ঈদগাহ সংলগ্ন খোলা জায়গায় এবছরও বিরাট মেলা বসেছে।