শ্রীপুরে ২০ কোটি টাকা মূল্যের খাস পুকুর উদ্ধার

শ্রীপুর প্রতিনিধি, গাজীপুর:
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার ভাংনাহাটি গ্রামে প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের ৩.৫৭ একর সরকারি খাস পুকুর জবর দখলকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদেকুর রহমানের বলিষ্ঠ পদক্ষেপে গত বৃহস্পতিবার দখল করে নেওয়া ঐ পুকুর উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, সম্প্রতি অস্তিত্বহীন মধ্যভাংনাহাটি যুব সমবায় সমিতির নামে ফকিরা গ্র“প অফ ইন্ডাস্ট্রির রিসোর্ট সেন্টার গ্রিনভিউ তিন বছরের জন্য লিজ নিয়ে জবর দখল করে। গ্রিনভিউ রিসোর্টের মালিক ফকির মো: মনিরুজ্জামানের পক্ষে তারই ম্যানেজার ও স্থানীয় সহকারী কমিশনারের (ভূমি) আত্মীয় বলে পরিচিত গাজী জহিরুল ইসলাম তার বহিরাগত লোকদের নিয়ে পুকুর গ্রাস করতে শ্রীপুর পৌরসভা হতে ভূয়া নাগরিকত্বের সনদ নিয়ে মধ্যভাংনাহাটি যুব সমবায় সমিতির নামে নিবন্ধন করে। যার নিবন্ধন নং-৩৬৬। গ্রিনভিউ ম্যানেজার গাজী জহিরুল ইসলাম সমিতির সভাপতি এবং তার কর্মরত কর্মচারীরা সমিতির সদস্য হয়ে ২০ সদস্যের সমিতি গঠন করেন। ৪৩নং শ্রীপুর মৌজার ভাংনাহাটি গ্রামাস্থ এস.এ ১৭৫৪, ১৭৫৫ এবং আর.এস ৭৬১০ দাগের ৩.৫৭ একর আয়তনের খাস পুকুর ৪০ হাজার টাকায় বাংলা ১৪২০ সন থেকে ৩ বছরের জন্য লিজ গ্রহণ করে। লিজ গ্রহিতা গাজী জহিরুল ইসলাম স্থানীয় একটি প্রভাশালী চক্রের ছত্র ছায়ায় সরকারি খাস পুকুর ইজারা নীতিমালা ভঙ্গ করে পুকুরটির অবকাঠামো পরিবর্তন ও জবর দখল প্রক্রিয়া শুরু করে। পুকুর পাড়ে থাকা প্রায় ১৪টি ভূমিহীন পরিবারকে বিভিন্ন কায়দায় উচ্ছেদ করে পার্শ্ববর্তী আর একটি খাস জায়গা দখল করে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। পুকুরের চার দিকে পাকা ভিম, লোহার পাইপের খুঁটি দিয়ে গ্রিলের মাধ্যমে সীমানা বেষ্টনি দিয়ে জবর দখলে করে নেয়। এ নিয়ে গত বুধবার বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশিত হলে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাদেকুর রহমান পুকুর জবর দখল প্রক্রিয়া বন্ধের জন্য সহকারী কমিশনারকে নির্দেশ দেন। পরে পৌর ভূমি কর্মকর্তা ও সার্ভেয়ার জবর দখল প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ব্যর্থ হলে বিকেলে নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাদেকুর রহমান নিজে উপস্থিত হয়ে গ্রিল কেটে দখল মুক্ত করার কাজ শুরু করেন। ভূমিদস্যুদের হাত থেকে শত বছরের পুরোনো পুকুরটি পুন:উদ্ধারে এলাকাবাসী স্বস্তির নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কিন্তু শুক্রবার রাতে জবরদখলকারীরা কৌশল পরিবর্তন করে পুকুর পাড়ে শুরু করেছে বৃক্ষ রোপণ। তাছাড়া পুকুরের পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের গ্রিল এখনো অক্ষত থাকায় পুনরায় জবরদখলের আশংকা করছে এলাকাবাসী। এদিকে গ্রিনভিউর ম্যানেজার জহিরুল ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিকদের তাদের পক্ষে সংবাদ প্রকাশ এবং বিরুদ্ধে আর কোন সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য বিভিন্ন ভাবে প্রভাবিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এতে এলাকাবাসী পুকুরটি ফের জবর দখলের আশংকা করছে। ভূমিদস্যুদের হাত হতে পুকুরটি রক্ষার জন্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
শ্রীপুরে ২০ কোটি টাকা মূল্যের খাস পুকুর উদ্ধার

Comments (0)
Add Comment