সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত এক বছর আগে ওই সড়কে সংস্কার কাজ শুরু হলেও কয়েক মাস পর হঠাৎ কাজ থেমে যায়। সামান্য বৃষ্টিতেই অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এ সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সড়কের অবস্থাটি বরমীবাসীর জন্য ভাইরাল হয়ে উঠেছে।
প্রায় প্রতিদিন ফেসবুকে ব্যক্তিগত পোষ্টে নানা রকম বক্তব্য দিচ্ছেন এ সড়কে যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষ। থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় কাদাপানিতে একাকার হয়ে গেছে সড়কটির অবস্থা। এর আগে সড়কের লাল ধুলোবালিতে মানুষ, পরিবহন সব কিছু লাল রঙে রঙিন হয়ে যেত। আগাম বৃষ্টিতে গত দুই সপ্তাহ ধরে দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে এ সড়কে জনদুর্ভোগ নিত্যসঙ্গী হয়ে পড়েছে।
সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটতে থাকে। বছর খানেক আগে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার অংশ সংস্কার করা হয়। প্রায় নয় মাস যাবত বাকি অংশে ইটের খোঁয়া, বালি বিছিয়ে রেখে গাড়ি চলাচল করে। পিচ ঢালাই না দেয়ায় ইটের খোঁয়া ধুলোবালিতে পরিণত হয়েছে। যানবাহন চলাচলের ফলে তা উড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফসলি জমি, বাড়ি ঘরে পড়ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদা পানিতে সয়লাব হয়ে পড়ে সড়কের পাঁচ কিলেমিটার এলাকা। শুষ্ক আবহাওয়ায় সড়ক থেকে ইটের বালি উড়ে ঘরের চাল, সবজি ক্ষেত, বীজতলা, ধান ক্ষেত, সড়কের পাশে সারি সারি গাছের ওপর পড়ে সব লাল রঙে রঙিন হয়ে পড়ে। লাল বালির মোটা আবরণ জমে স্তুপ হয়ে পড়ে। এরপর গত দুই সপ্তাহ যাবত আগাম বর্ষার বৃষ্টিতে রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বর্তমানে এ সড়কে চলাচলকারী সকল যানবাহন বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে ওই এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দাসহ স্কুল কলেজের নিয়মিত ছাত্র/ছাত্রী ও ব্যবসায়ীরা।
গাড়ারন গ্রামের কামরুজ্জামান জানান, আগে ধুলোবালিতে কাপড় নষ্ট হলে এখন নষ্ট হচ্ছে কাদা পানিতে। এজন্য কিছু ছাত্র/ছাত্রী স্কুলে যাওয়া ছেড়েই দিয়েছেন।
ট্রাক চালক মুমিনুল ইসলাম জানান, বরমী থেকে প্রতিদিন তাদের কয়েক ট্রিপ মালামাল পরিবহনের দরকার হয়। রাস্তা খারাপ থাকায় এখন বরমী যাওয়া বন্ধ আছে।
প্রভাতী-বনশ্রী পরিবহনের সুপারভাইজার দুলাল বাবু জানান, রাস্তা খারাপের কারণে এরাস্তায় গাড়ি চালানো অসম্ভব বিধায় যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সংস্কার হলে আবার যান চলাচল শুরু হবে।
ভাওয়াল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্র হানি আহমেদ জানায়, নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও রাস্তার দুরাবস্থার কারণে কয়েকদিন পর পর যেতে হয়।
রয়েল গ্রæপের কর্মকর্তা লুৎফর রহমান জানান, আগে বরমী থেকে প্রতিদিন গিয়ে গাজীপুর অফিস করতাম। রাস্তার দুরাবস্থার কারণে এখন গাজীপুরেই বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে।
এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী সুজায়েত হোসেন জানান, উক্ত রাস্তার দরপত্র আহবান কাজ শুরু করার পর ঠিকাদার কাজ করতে অনাগ্রহী হওয়ায় নতুন করে দরপত্র আহবান করা হচ্ছে। এতে সাময়িক কাজ বন্ধ থাকায় দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।