সমস্ত সমস্যার সমাধান কেবল জাতীয় ঐক্যের মধ্যেই রয়েছে -শফিকুল আলম উখবাহ

স্টাফ রিপোর্টার:

গতকাল এক লিখিত বিবৃতিতে হেযবুত তওহীদের মুখপাত্র শফিকুল আলম উখবাহ বলেন, সমস্ত সমস্যার সমাধান কেবল জাতীয় ঐক্যের মধ্যেই রয়েছে। তিনি ঐক্যের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে আরও বলেন, সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে বিশ্বজগতে এবং মানবজাতিতে যে প্রাকৃতিক নিয়মগুলি বিরাজ করছে সেগুলির কোনো পরিবর্তন নেই, ব্যতিক্রম নেই। মানুষ যখনই সেগুলির ব্যতিক্রম করার চেষ্টা করেছে, তখনই মানবজীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়। আজ আমাদের সমাজে যে অন্যায়, অরাজকতা, দুর্নীতি, অনৈক্য, অবিচার, বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে সেগুলির সবই প্রাকৃতিক নিয়মগুলিকে অস্বীকার করে জোর করে মানুষের মনগড়া বিধি-বিধান প্রয়োগ করার ফল। আমরা যদি এই শ্বাসরুদ্ধকর জীবনযাপন থেকে মুক্তি পেতে চাই তাহলে আমাদেরকে অবধারিতভাবে পাঁচটি প্রাকৃতিক নিয়মের অধীনে আসতে হবে এবং এই পাঁচটি নিয়মকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ঐ পাাঁচ দফা নিয়ম হলো- ১) ঐক্য, ২) শৃঙ্খলা, ৩) আনুগত্য, ৪) সর্বপ্রকার অন্যায়ের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ, ৫) ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম।
১.ঐক্য:
ঐক্যবদ্ধ শক্তি চিরকালই এক্যহীনের উপরে বিজয় লাভ করে। একশ জন ঐক্যহীন লোকের উপরে দশজন ঐক্যবদ্ধ লোক অনায়াসে বিজয় লাভ করে। পৃথিবীর ইতিহাসে যে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে সেই জাতি বিজয় লাভ করেছে। কোনো শত্র“ তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। ১৯৭১ সালে বাঙ্গালী জাতি যাবতীয় ভেদাভেদ ভুলে অন্যায়-অবিচারের বিরোদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। সেই ঐক্যের গুণে প্রাকৃতিক নিয়মেই তারা সেদিন বিজয় লাভ করেছিল। ১৪০০ বছর আগে আইয়ামে জাহেলিয়াতের আরবদের প্রধান বৈশিষ্টই ছিল সার্বক্ষণিক কলহ, বিবাদ অর্থাৎ চূড়ান্ত অনৈক্য। তুচ্ছাতিতুচ্ছ কারণে, যেমন একটি ঘোড়ার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে গিয়ে শত শত মানুষ যুগের পর যুগ যুদ্ধ চালিয়ে গেছে। এই জাতীয় চরিত্রের কারণে তারা দুনিয়ার বুকে ছিল একটি অবজ্ঞাত, অখ্যাত বর্বর জাতি। মহানবী (দ:) এসে তাদেরবে ঐক্যবদ্ধ করলেন ন্যায়ের পক্ষে, হকের পক্ষে এবং অন্যায়ের বিপক্ষে। এরপর সেই আরবরাই সর্বদিকদিয়ে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জাতিতে পরিণত হল। সুতরাং আমরা যদি জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে সম্মানজনক অবস্থানে যেতে চাই তাহলে আমাদেরকেও অন্যায়ের বিরোদ্ধে, ধর্মব্যবসার বিরোদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরোদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা সজাগ থাকবো কেউ যেন আমাদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করতে না পারে। ঐক্যভঙ্গ হয় এমন কথা আমরা বলবো না, এমন কোনো কাজও আমরা করবো না। যারা ঐক্য নষ্ট করে তারা হচ্ছে জাতির শত্র“। দুটি কারণে ঐক্য নষ্ট হতে পারে। ঐক্য ধ্বংসের প্রথম কারণ হচ্ছে নেতা কোনো সিদ্ধান্ত দিলে সে বিষয়ে মতভেদ করা। আর দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে একজনের দোষ-ত্র“টি নিয়ে তার অনুপস্থিতিতে সমালোচনা করা। যারা জাতির মঙ্গল চায় তারা কখোনই জাতি ধ্বংসকারী কাজগুলি করবে না। আজ আমাদের এই ১৬ কোটি বাঙ্গালী জাতির অবস্থা কী? গত ৪২ বছরে আমাদের জাতির ঐক্য এমনভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে যে একটি গ্রামও খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে মানুষগুলি ঐক্যবদ্ধ অর্থাৎ কোনো একটি বিষয়ে তারা একমত হবে। জাতির ঐক্য নষ্ট করার জন্য পশ্চিমা বিশ্ব ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের উপরে তাদের তৈরী রাজনৈতিক মতবাদগুলি চাপিয়ে দিয়েছে। পুরো জাতিটি আজ রাজনৈতিক দলাদলি করে, ধর্মীয় বিষয়ে মতবিরোধ করে হাজার হাজার ভাগে বিভক্ত হয়ে আছে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের মধ্যেও আছে বহুরকম বিভক্তি ও দ্বন্ধ-সংঘাত। আমাদের জাতীয় ও রাজনৈতিক পরিমন্ডলে এই হিংসাত্মক হানাহানির পরিবেশ আমরাই তৈরী করে রেখেছি যার ফলে নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনাতিপাত করছি। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে প্রথমে আমাদেরকে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে একতাবদ্ধ হতে হবে। আমরা যদি এই জাতিটিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারি তাহলে ১৬ কোটির এই জাতি আর অবজ্ঞাত বা অবহেলিত হয়ে থাকবে না, কারণ ঐক্যই শক্তি। আমরা ঐক্যবদ্ধ হলে পৃথিবীর বুকে আমরা হবো একটি পরাশক্তি। সমগ্র বিশ্ব আমাদের পায়ে লুটিয়ে পড়বে এনশা’আল্লাহ।
২. শৃঙ্খলা:
শৃঙ্খলা শব্দটি এসেছে শৃঙ্খল থেকে। শৃংখলা হচ্ছে কিছু নিয়ম নীতির শেকলে নিজেকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে বাঁধা। পৃথিবীর যে কোনো উন্নত জাতির দিকে দৃষ্টি ফেরালে দেখা যাবে তারা সংখ্যায় ছোট হলেও ব্যাক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, ও জাতীয় জীবনে তাদের কথায়, কাজে ও চিন্তায় সুশৃংখল বিধায় সকল প্রতিকূলতা পেছনে ফেলে উন্নতির শিখরে আরোহণ করেছে। পক্ষান্তরে একটি অর্থ সম্পদে সমৃদ্ধ জাতিও যদি তাদের চরিত্রে বিশৃংখল হয়, তবে তারা অতি দ্রুত অধঃপতিত হয়। বিশ্ব প্রকৃতিও নিখঁত শৃংখলার উপর দন্ড্য়মান। এ শৃংখলার সামান্যতম ব্যত্যয় হলেই সমস্তকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। প্রকৃতির এই সুনিপুণ শৃংখলার কারণ সৃষ্টিজগতের বিধাতা একজন। তাই শৃংখলার প্রথম ধাপ হচ্ছে, যখন কিছু মানুষ কোনো বিশেষ লক্ষ্য অর্জনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হবে তখন তাদের মধ্যে যিনি নেতা থাকবেন তাঁর প্রতিটি কথা সবাই মনোযোগ সহকারে শুনবে এবং বুঝে নিবে। নির্দেশনা সঠিকভাবে না বুঝলে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও ভূল থেকে যাবে। এই শৃংখলা ছাড়া ঐ ঐক্য এক মুহুর্তও টিকবে না। কাজেই আমরা আর শৃংখলা নষ্ট করবো না। আমরা একটি সুশৃংখল, সুসংবদ্ধ জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবো। কারও ক্ষুদ্র স্বার্র্থের জন্য আমরা শৃংখলা নষ্ট করবো না। একটি সামরিক বাহীনির সদস্যরা সুশৃংখল থাকেন বলেই তারা দ্রুত এবং সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন। অনেক কঠিন কাজই তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সহজে করে ফেলতে পারেন। কাজেই আমরাও যদি পৃথিবীর বুকে একটি ঐক্যবদ্ধ শ্রেষ্ঠ জাতিতে পরিণত হতে চাই সেক্ষেত্রে আমাদেরও শৃংখলা মেনে চলা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
৩. আনুগত্য:
আনুগত্য হল অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রাকৃতিক নিয়ম। সমস্ত ব্রহ্মাণ্ড এক স্রষ্টার হুকুমে পরিচালিত হচ্ছে। এভাবে কোনো এক পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্রের সকল মানুষ যদি তাদের জাতির নেতার হুকুম মেনে না চলে তাহলে সেখানে শৃংখলা থাকবে না। জাতির নেতার আনুগত্য যদি না করা হয় সে জাতি কোনোদিন শক্ত ভিত্তির উপর দাড়াতে পারে না। সমাজের ক্ষুদ্রতম সংগঠন পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পর্যন্ত একটি আদেশ দেওয়ার ক্ষমতাবান কর্তৃপক্ষ থাকে। আদেশ শোনামাত্র বিন্দুমাত্র ইতঃস্তত না করে সঙ্গে সঙ্গে সে আদেশ পালন করাই হল একটি পরিবার, গোষ্ঠি বা জাতির মেরুদন্ড। শরীর যেমন মেরুদন্ডের উপর দাড়িয়ে থাকে তেমনি জাতি দাঁড়িয়ে থাকে আনুগত্যের উপর। এটা যেখানেই দূর্বল সেখানেই অক্ষমতা এবং ব্যর্থতা। আধুনিক যুগে আমরা পশ্চিমাদের অনুকরণে যে রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করে রেখেছি তাতে প্রায়শই দেখা যায়, কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যখনই কোনো আদেশ বা বিধান দেন, সঙ্গে সঙ্গে জাতির মধ্যে থেকে একটি বড় অংশ এর বিরুদ্ধাচারণ ও সমালোচনায় লিপ্ত হয়ে যায়। এই ব্যবস্থার কূ-প্রভাব এখন সর্বত্র। পরিবারে এখন সন্তান বাবাকে মানে না, স্ত্রী তার বরকে মানে না, ছাত্র শিক্ষককে মানে না, এভাবে আমলারা মন্ত্রীদেরকে মানে না, সাংসদরা স্পীকারকে মানে না, বিরোধীদল সরকারকে মানে না। এভাবে সর্বত্র এখন না মানার প্রবণতা। কিন্তু মানব ইতিহাসে যে জাতিগুলো শ্রেষ্টত্ব অর্জন করেছে তাদের ইতিহাস দেখুন, দেখবেন পাতায় পাতায় সঞ্চিত আছে জাতির নেতৃত্বের প্রতি তাদের অটল আনুগত্যের স্বর্ণোজ্বল ইতিহাস। যেহেতু আমরাও একটি সমৃদ্ধশালী জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার লক্ষ্য নিয়ে ধর্মব্যবসায়ী ও জঙ্গীবাদের বিরোদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি তাই আমাদেরকেও চারিত্রিক দিক থেকে আনুগত্যশীল হতে হবে, অবাধ্য হলে চলবে না। কাজেই আমরা কোথাও একত্রিত হলে একজনের কথা শুনবো, কোথাও গেলে একজনের কথা মান্য করবো। নেতার সিদ্ধান্ত স্থির হয়ে গেলে সে বিষয়ে আর কোনো মতভেদ সৃষ্টি করবো না।
৪. সর্বপ্রকার অন্যায়ের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ:
অন্যায়ের বিরোদ্ধে সংগ্রাম করতে হলে নিজেদেরকেও অন্যায়ের সংশ্রব পরিহার করতে হয়। আল্লাহর রাসূল যখন আবির্ভূত হন, তখন আরবীয় গোত্রপতি এবং ধর্মজীবি পুরোহিতদের মুখের কথাই ছিল আইন। তখন যারা ইসলাম প্রচার করলেন,
রসূলাল্লাহ তাদেরকে নিয়ে সকল সামাজিক অনাচার, অপকর্ম, অশ্লীলতা, মূর্তিপূজা ইত্যাদি থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন। সেভাবে আমাদেরকেও যে রাজনৈতিক মতবাদগুলি জাতিকে ৪২ বছর ধরে হানাহানির মধ্যে লিপ্ত করে রেখেছে, সেগুলোর কুফল সম্পর্কে সচেতন হয়ে তার অন্ধ আনুগত্য পরিত্যাগ করতে হবে। সেই সঙ্গে যারা ধর্ম ব্যবসা করছে এবং ধর্মকে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করছে আমরা তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করবো, তাদেরকে অর্থ সহায়তা করবো না, যে কাজ সমাজের ক্ষতি করে, মানুষের ক্ষতি করে এমন কাজ থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখবো।
৫. ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম:
উপরে উল্লেখিত চারটি নিয়ম যখন একটি জাতির চরিত্রে প্রতিষ্ঠিত হবে তখনই সেই জাতি সত্যের পথে সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হল। এই সংগ্রাম ব্যক্তিস্বার্থে নয়, জাতির স্বার্থে, মানবতার শান্তির লক্ষ্যে। আমাদের সংগ্রাম করতে হবে সমাজে প্রচলিত সকল অন্যায়, অবিচার, অত্যাচার, মিথ্যার বিরোদ্ধে এবং এই সংগ্রামে একদল মানুষকে তাদের জীবন ও সম্পদ পরিপূর্ণরুপে উৎসর্গ করতে হবে। অন্যথায় এতবড় কাজ কখনোই করা যাবে না। ৪২ বছর আগে অনেক আশা ও স্বপ্ন নিয়ে বাঙ্গালী জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন তাদের অপূর্ণই রয়ে গেছে, জাতি হিসেবে আমরা এখনও অনেক পিছিয়ে আছি। রাজনৈতিক কোন্দল, সহিংসতা, বৈদেশিক ষড়যন্ত্র এবং ধর্মব্যবসায়ীদের অপরিণামদর্শী দেশবিরোধী কর্মকান্ড দেশকে প্রতিনিয়ত পেছনের দিকে টানছে। সর্বদিকে জাতির যখন নিদারূন অধঃপতন, অন্যায় ও দুর্নীতির সীমাহীন প্রতিযোগিতা চলছে, তখন জাতিকে ঘুরে দাড়ানোর একটি মহাসুযোগ আল্লাহ দান করেছেন যামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খাঁন পন্নীর মাধ্যমে। তাঁর শিক্ষায় যদি এই জাতি নিজেদেরকে শিক্ষিত করে তোলে, তাঁর দেখানো পথে যদি এ জাতি চলে তবে এই জাতির উত্থানকে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।
সুতরাং আসুন আমরা শপথ নেই, “আামরা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হবো এবং জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করবো। আমরা কেউ কারো ক্ষতি করবো না, আমরা অন্যের সম্পত্তি নষ্ট করবো না। অন্যায়ভাবে কারও সম্পত্তি গ্রাস করবো না। কেউ কারো অগোচরে নিন্দা করবো না। আমরা ধর্মকে কারো স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যবহৃত হতে দেব না। আমরা কারো প্ররোচনায় জ্বালাও-পোড়াও, ভাংচুর ও সহিংসতা করবো না। আমরা কোনো রাস্তাঘাট, পুল, কালভার্ট, রেললাইন নষ্ট করবো না। আমরা বিশ্বাস করবো জাতির সম্পদ মানে আমাদেরই সম্পদ। আমরা হবো সুশৃংখল, শৃংখলাকে ভালোবাসবো, বিশৃংখলাকে অপছন্দ করবো। আমরা সবাই মৃত্যু পর্যন্ত সকল অন্যায়, অবিচার ও অসত্যের বিরোদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাবো এনশা’আল্লাহ।”

Comments (0)
Add Comment