আপনি কি রেগে গেলে দাঁত কিড়মিড় করেন? অথবা ঘুমের ঘোরে? তাহলে জেনে নিন, এটি হতে পারে আপনার দাঁত ক্ষয়ে যাবার কারণ।
অসচেতন ও অন্যমনস্ক হয়ে আমরা নিজেরাই দাঁতের ক্ষতি করি। এমন অনেক অভ্যাস আছে যা সরাসরি দাঁতের ক্ষতি না করলেও দাঁতের রোগ সৃষ্টিতে সাহায্য করে থাকে। এমনই একটি হলো ব্র“ক্সিং, যাকে গাইন্ডিং বা ক্লিচিংও বলা হয়। অসচেতন অবস্থায় উপরের ও নিচের দাঁতের পরস্পর ঘর্ষণকেই বলে ব্র“ক্সিং।
সাধারণভাবে আমরা যাকে বলি দাঁত কিড়মিড় বা দাঁত খিঁচানি। অন্যমনস্ক থাকলে, চিন্তিত থাকলে কিংবা মেজাজ খারাপ থাকলে অনেকেই এটা করে থাকেন। ঘুমন্ত অবস্থায়ও অনেকে ব্র“ক্সিং বা দাঁত কিড়মিড় করেন। আসুন জেনে নিই এ বদঅভ্যাসটির কিছু ক্ষতিকর দিকের কথা।
ক্ষতিকর দিক
– ব্র“ক্সিং বা দাঁত কিড়মিড় টুথ-ডিক অর্থাৎ দন্তক্ষয় রোগের প্রবণতাকে বাড়িয়ে তোলে। উপরের ও নিচের দাঁতের ঘর্ষণে ক্রমাগত দাঁতের ক্ষয় হতে থাকে।
– দাঁতের চিকিৎসা চলছে এমন কারো দাঁত কিড়মিড় করার অভ্যাস থাকলে তার ফল হতে পারে ভয়াবহ। দাঁতের ঘর্ষণের ফলে ফিলিং করা দাঁতের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিতে পারে, যা পরে দন্তক্ষয় রোগে পরিণত হয়।
– ব্র“ক্সিং বা দাঁত কিড়মিড় দাঁতের পেরিওডোন্টাল রোগ বা প্ল্যাকজনিত সমস্যার জন্য মারাÍক। এর কারণে পেরিওডোন্টাল লিগামেন্ট মারাÍকভাবে প্রভাবিত হয় এবং প্ল্যাক অর্থাৎ দাঁতে ময়লা দ্রুত জমতে থাকে।
– ব্র“ক্সিং-এর কারণে দাঁতের স্পর্শকাতরতা বেড়ে যায়। আর তাই ঠাণ্ডা বা গরম কিছু খাওয়ার সময় হঠাৎ করে দাঁত শিরশির করে ওঠে।
অনবরত ব্র“ক্সিং-এর ফলে দাঁতে প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে।
– ব্র“ক্সিং-এর কারণে দাঁতে অসংখ্য অদৃশ্য কিন্তু ক্ষতিকর চিড় দেখা দেয়। এ সমস্যাকে ক্র্যাকড টুথ সিনড্রম বলা হয়। ব্র“ক্সিং দাঁতের স্বাভাবিক কাজের ক্ষমতাকে হ্রাস করে।
– অতিরিক্ত দাঁত কিড়মিড় করার কারণে অনেক সময় দাঁত ভেঙ্গে যায়, যা খুবই মারাÍক।
– ব্র“ক্সিং বা দাঁত কিড়মিড় দাঁতের মাঢ়ির চারদিকে চাপ প্রয়োগ করে দাঁতের গঠনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে মাঢ়িজনিত সমস্যার কারণে দাঁত অনেক দুর্বল হয়ে যায়। এ দুর্বল দাঁতে যখন খুব দ্রুত ব্রাশ করা হয় তখন তা দাঁতের গঠনকে আরো ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্বল করে তোলে।
কী করবেন?
ব্র“ক্সিং বা দাঁত কিড়মিড় দাঁতের সুস্থতাকে নষ্ট করে দেয়। এটি কোনো রোগ নয় তবে এ থেকেই টুথ-ডিকে, প্ল্যাক, ক্র্যাকড টুথ সিনড্রমসহ দেখা দেয় বিভিন্ন রোগ। ঘুমের মধ্যে যারা এ কাজটি করেন তারা ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবহার করতে পারেন ব্র“ক্সিং গার্ড। এটা এক ধরনের প্লাস্টিকের তৈরি অ্যাপল্যায়েন্স। তবে এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। এর জন্য সবচেয়ে আগে ব্র“ক্সিং-এর ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। প্রতিদিন মনে করে যেভাবে আমরা দাঁত ব্রাশ করি ঠিক সেভাবে মনে রাখতে হবে ব্র“ক্সিং-এর অপকারিতার কথা। নিজে এই বদঅভ্যাস ত্যাগ করুন, পরিচিত কারো এ সমস্যা থাকলে তাকে সচেতন করুন।