জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর রিফাতকে হত্যা করা হয়েছে। নিহত রিফাত (১৭) পৌরসভার বলারদিয়ার গ্রামের প্রতিবন্ধী আশরাফের ছেলে ৷
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মহব্বত কবীরের নেতৃত্বে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দুপুরে লাশ উদ্ধার করে তদন্তের জন্য সরিষাবাড়ী থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ আগস্ট বুধবার রাতে সরিষাবাড়ী পৌর এলাকার বলারদিয়ার গ্রামের আশরাফের ছেলে নিহত রিফাত (১৭) ও প্রতিবেশী সুলতানের ছেলে রাহাত ও আহাদ এর সাথে বাড়ীর পার্শ্বে বসে লুডু খেলছিলেন। পরবর্তীতে হঠাৎ হত্যাকারীর গাঁজার প্যাকেট হারিয়ে যায়। হত্যাকারী সন্দেহ করে হারিয়ে যাওয়া গাঁজার প্যাকেটটি নিহত রিফাতের কাছে আছে৷ আর তাই হত্যাকারী নিহত রিফাতকে ডেকে বলারদিয়ার উত্তর পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নিয়ে সার্চ করে এবং তাকে শারীরিক নির্যাতন করে।
পরবর্তীতে বিষয়টি রিফাত তার দাদা রসুলকে জানায়, রসুল রাহাত এর পরিবারের কাছে বিচার চাইলে রাতে রাহাত ও তার মা আফরোজা আক্তার তার বাড়ীতে আসে।
পরে রাত ১০ টায় পূনঃরায় নিহত রিফাতের বাড়ীতে এসে আবার রিফাতকে কাঠ দিয়ে তৈরি বসার পিরা দিয়ে মারধর করে। পরে রিফাতকে ১ লা সেপ্টেম্বর সকাল ৬টায় সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. দেবাশীষ রাজবংশী প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। সরিষাবাড়ী থেকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল এর উদ্দেশ্য রওনা হলে সকাল ৭টায় পথিমধ্যে রিফাত মারা যায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতের পরিবার থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। হত্যাকারীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসীরা।
এ বিষয়ে নিহতের দাদা রসুল বলেন, আমার প্রতিবন্ধী ছেলে আশরাফ এর ছেলে রিফাত। বুধবার সন্ধ্যায় আমাকে কল দিয়ে রিফাত বলতেছে, দাদা আমাকে রাহাত মারছে। পরে আমি মোড় থেকে রিফাতকে নিয়ে বাড়ীতে চলে এসেছি। রাতে রাহাত ও তার মা এসে আবার রিফাত ফিড়া দিয়ে মেরেছে।আমি আমার নাতি রিফাত হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ দেবাশীষ রাজবংশী বলেন, সকালে রোগীকে নিয়ে আসলে আমরা ভর্তি করে নেই। ভর্তি করার সময় তার মাথাসহ সমস্ত শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্যআমরা তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করি এবং পরে জানতে পারি সে মৃত্যুবরণ করেছে।
অপরদিকে সরিষাবাড়ী থানার ওসি(তদন্ত) আব্দুল মজিদ জানান, ইতিমধ্যেই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নিহত রিফাতের বাবা মানষিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ঘটনার দিন রাতে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন রিফাত এর এবং ১লা সেপ্টেম্বর ভোরে রিফাতের অবস্থা আশংকাজনক হলে রিফাতের দাদা সকাল ৬ টায় সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করলে দিগপাইত মোড়ে সকাল ৭ টায় রিফাত মারা যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মহব্বত কবীর প্রতিবেদককে বলেন , আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। নিহত রিফাত এর লাশ ময়না তদন্তের জন্য উদ্ধার করে সরিষাবাড়ী থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।