বিনোদন:
আজও তিনি ভক্তদের হৃদয়ের রাজা, আক্ষরিক অর্থেই বাংলাদেশের এক সুপারস্টার। জীবিত অবস্থায় বিখ্যাত তো সকলেই হন, কিন্তু মৃত্যুর এত বছর বাদেও ভক্তদের মনে রাজত্ব করে যাওয়া নায়ক বুঝি এই প্রথম। আর হবে নাই বা কেন। আজ পর্যন্ত যে তার সমকক্ষ কেউ নেই। আর এই জন্যই বুঝি সালমান শাহ-এর মর্মান্তিক অকাল মৃত্যু আজও কাঁদিয়ে যায় সকলকে। ৫০ ভাগ কাজ করেও সালমান শাহ শেষ করে যেতে পারেননি ‘মন মানে না’ ছবির কাজ, এ কথা হয়তো অনেকেই জানেন। নায়ক রিয়াজ পরে সালমানের পরিবর্তে এই ছবিতে অভিনয় করেন। এর নেপথ্যের কাহিনীটুকু কেউই জানেন না। ভাগ্য কি নির্মম পরিহাস করেছে, সেই গল্প শুনুন এবার। দুঃখ নিয়ে এ কথা জানাতে গিয়ে এ ছবির নির্মাতা মতিন রহমান বলেন, ১৯৯৬ সালের জুন মাস। এফডিসির ৮ নম্বর ফ্লোরে একটি মাজারের সেট তৈরি করা হয়েছে। মাজারে জীবনের প্রতি হতাশ সালমান সৃষ্টিকর্তার কাছে ফরিয়াদ জানিয়ে কাঁদছে আর গাইছে। তার পরনে ছিল সবুজ রঙের পাঞ্জাবি। এ সময় সেখানে হাজির হলেন প্রখ্যাত চিত্র নির্মাতা দিলীপ বিশ্বাস। তার সঙ্গে সুদর্শন একটি ছেলে। দিলীপ বিশ্বাস আমাকে বললেন ওর নাম রিয়াজ। সম্ভব হলে ওকে নিয়ে কাজ করার চিন্তা করতে পারেন। ওই দিনই ছিল ‘মন মানে না’ ছবিতে সালমানের শেষ অভিনয়। কারণ এর তিন মাস পর ওর মৃত্যু ঘটে। যেহেতু এতে সালমানের আরও ৫০ ভাগ কাজ বাকি ছিল তাই নতুন করে নায়ক নিয়ে ছবিটি নির্মাণ করতে হলো। নিয়তির কি নির্মম পরিহাস! যে রিয়াজ ওইদিন দিলীপ দা’র সঙ্গে সালমানের শুটিং দেখতে এসেছিল সেই রিয়াজই এই ছবিতে সালমানের স্থলাভিষিক্ত হলো। সেদিন আমি, রিয়াজ, সালমান বা দিলীপ দা কি ঘুণাক্ষরেও ভেবেছিলাম যে একদিন সালমানের জায়গায় রিয়াজকে কাজ করতে হবে। নির্মাতা মতিন রহমান দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলেন, সৃষ্টিকর্তা আসলে কার ভাগ্যে কি লিখে রেখেছেন তা আমরা কেউই জানি না। নিয়তি বড়ই নিষ্ঠুর। নিয়তির অমোঘ বিধানে পৃথিবীতে অনেক কিছুই
বদলে যেতে পারে, যা আমরা চিন্তাও করতে পারি না। যা হোক ১৯৯৭ সালের ১১ নভেম্বর মুক্তি পায় রিয়াজ ও শাবনূর অভিনীত ‘মন মানে না’ এবং সুপার হিট হয়।