সৈয়দপুরে গ্রীষ্মের রসালো ফল বাজারে

মহাবুব উল হাসান, সৈয়দপুর: 
ঋতু পরিক্রমায় এখন চলছে গ্রীষ্মকাল। ফলে এখানকার বাজারে রসালো ফলে ভরে উঠেছে। বাজারের দোকানী ও ফুটপাতের দোকানদার ফলের ঝুড়ি নিয়ে বসেছেন। বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর। দাম একটু চড়া হলেও ক্রেতারা মৌসুমী ফলের স্বাদ নিতে কিনছেন। এ কারণে মৌসুমী ফলের বেচাকেনাও জমে উঠেছে উত্তরের বাণিজ্য কেন্দ্র সৈয়দপুরে।

গ্রীষ্মের ফল আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, জামরুল, ডেউয়া, বাঙ্গী, পেয়ারা, তালের শাঁস প্রভৃতি ফলে বাজার ভরে গেছে। স্বল্প মেয়াদী ফল লিচু কিনতে ছোট-বড় সবার আগ্রহটাই বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাজারে মাদ্রাজ ও বোম্বে জাতের লিচু প্রতিশ’ বিক্রি হচ্ছে পাইকারী বাজারে ৫০ টাকা এবং খুচরা বাজারে ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকায়। আর চায়না-২, চায়না-৩ জাতের লিচু আকারে বড়, রসালো, বিচি নেই বললেই চলে। বিক্রি হচ্ছে পাইকারী বাজারে ২৫০ টাকায় আর খুচরা দোকানীরা বিক্রি করছেন সাড়ে ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকায় ১শ’ লিচু। প্রচন্ড গরমের কারণে আম, জাম, কাঁঠালসহ নানা ধরণের ফল পাকতে শুরু করেছে।

কাঁঠাল জাতীয় ফল হলেও আমের গুরুত্ব কম নয়। নানা জাতের আম এদেশে পাওয়া যায়। দেশি আম টক-মিষ্টি স্বাদের হয়ে থাকে। গোপাল ভোগ, ক্ষিরসাপাত, ল্যাংড়া, রানীভোগ, ফজলি এগুলো মিষ্টি জাতের আম। এছাড়াও এখন দেশে নতুন জাতের আম ফলছে। যেমন- আ¤্রপালি, রূপালী, সোনালী, হাঁড়িভাঙ্গা, সূর্যপুরী, কাঁচামিঠা ইত্যাদি। কাঁঠাল বাজারে প্রতিটি ১৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই অঞ্চলে সবচেয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে হাঁড়িভাঙ্গা আম। কয়েকদিন পরেই তা বাজারে আসবে। সাদা ও লাল জামরুল প্রতিকেজি ৮০ টাকা, জাম প্রতিকেজি ১৬০ টাকা আর ডেউয়া প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়।

কাঁঠাল এমন একটি ফল যা কাঁচা ও পাকা দুই অবস্থাতেই খাওয়া যায়। কাঁচা কাাঁঠালকে এচার বলা হয়। এই কাঁঠালে তরকারি হয়। কাঁঠালের বিচি অনেকেরই প্রিয় খাবার। বিশেষ করে এখানকার অবাঙালিরা খুব পছন্দ করেন এর তরকারি। এর বাইরের ছোকলা গৃহপালিত প্রানী যেমন গরু, ছাগলের প্রিয় খাবার। আম প্রায় সকলেরই প্রিয় ফল। লিচুও তাই। আম এই মাসের ফল হলেও ভাদ্র- আশ্বিন মাসেও পাওয়া যায়। কিন্ত লিচু খুব স্বল্প সময়ের ফল। দেশে সাধারণত চারপ্রকার লিচু পাওয়া যায়। যেমন- দেশি, বোম্বাই, চায়না এবং বেদেনা জাতের। বেদানা জাতের লিচুর দাম সবচেয়ে বেশি। জামও স্বল্প সময়ের ফল। জাম কয়েক প্রকার। বড় জাম, ছোট জাম ও ক্ষুদে জাম। ক্ষুদে জাতের জাম পাওয়া যায় ভাদ্র- আশ্বিন মাসে। তবে এখানেই শেষ নয়, মাসের শেষ দিকে পাওয়া যাবে কামরাঙা, ছফেদা, গাব, আমড়া ইত্যাদি।

উপজেলার প্রতিটি এলাকায় কলার আবাদ করা হচ্ছে। বিশেষ করে উপজেলার বোতলাগাড়ির শ্বাসকান্দর এলাকায় বিভিন্ন চাষের কলার আবাদ করা হচ্ছে। কলার ফলনও এই সময় বেশি হয়। উল রোগ প্রতিরোধক এবং রোগ নিরাময়কও বটে। এক কথায় বলা যায়, ফল মহান সৃষ্টিকর্তার নিয়ামকস্বরুপ। শুধু মানুষই নয় পশুপাখিরও প্রিয় খাদ্য ফল। তবে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ফলে রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে বিক্রি করে। ডাক্তারদের মতে এটি স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। ফল কেনার আগে এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ হতে হবে। কর্তপক্ষেরও এর বিরুদ্ধে নিতে হবে দৃষ্টান্তমুলক ব্যবস্থা। পাশাপাশি গড়ে তুলতে সামাজিক সচেতনতা।

Comments (0)
Add Comment