সব প্রস্তুতির পরও চেহারা অনেকখানি মলিন দেখায় এবং সৌন্দর্যও ফুটে ওঠে না যদি চোখের চারপাশে কালো দাগ থাকে। তাই চোখের চারপাশের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি।
চোখের চারপাশের কালো দাগের কারণ
চোখের চারপাশের যত্ন নিতে হলে আপনাকে আগে জেনে নিতে হবে কী কী কারণে চোখের চারপাশে কালো দাগ তৈরি হয়। রক্ত স্বল্পতা, কিডনি সংক্রমণ, ক্ষতিকর সূর্য রশ্মি, অনিদ্রা, হরমোনের পরিবর্তন, পুষ্টির অভাব, বংশগত কারণ, ধূমপান ও মদ্যপান; এছাড়া পানি স্বল্পতাসহ নানা কারণে চোখের চারপাশ কালো হতে পারে। অ্যালার্জি, হাঁপানি বা এক্সিমার মতো চোখের চুলকানি সৃষ্টিকারী যেকোনো রোগে চোখের চারপাশে কালো দাগ হতে পারে। চোখ চুলকানো বা ঘষার কারণে এটা হয়ে থাকে। কিছু খাদ্যও (অ্যালার্জি-বর্ধক) এই সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। আবার যেকোনো ওষুধ, যা শিরাকে স্ফীত বা বর্ধিত করে তার জন্যও হতে পারে। খাদ্যের পুষ্টির অভাব বা সুষম খাদ্যের অভাবে চোখের নিচে দাগ দেখা দিতে পারে। খনিজ লবণের অভাবে এটা হয় বলে ধারণা করা হয়। খনিজ লবণের অভাবে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, ফলে দেহের টিস্যু ঠিকমতো অক্সিজেনের সরবরাহ পায় না। গর্ভাবস্থায় বা মাসিকের সময়ও চোখের নিচে ফ্যাকাসে হতে পারে, ফলে চোখের নিম্নাবস্থিত শিরা আরও দৃশ্যমান হয়। ঘুমের অভাবে ত্বক ফ্যাকাশে হতে পারে। এতে দাগ আরো গাঢ় হতে পারে। এটি লিভার রোগের লক্ষণও হতে পারে। বয়সের সঙ্গে কালো দাগ আরও লক্ষণীয় এবং স্থায়ী হয়।
প্রতিনিয়ত যত্ন
চোখ সুন্দর রাখার জন্য নিয়মিত চোখের আলাদা যত্ন নিতে হবে। যেমন—চোখ বন্ধ করে ২ টুকরো শসা ২ চোখের ওপর দিয়ে ৫-১০ মিনিট রাখতে পারেন। প্রতিদিন আপনার চোখে ঠাণ্ডা চা ব্যাগ বা নরম কাপড়ে আবৃত একটি বরফ দিয়ে ১০-১৫ মিনিট রাখতে পারেন। আলুর রস নিঃসৃত করে শুষ্ক আলু চোখে দিয়ে ৩০ মিনিট রেখে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন। একটি চামচ ফ্রিজে ১০-১৫ মিনিট রেখে সেটি কাল দাগের অপর চেপে ধরতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না চামচ গরম হয়। ভিটামিন কে-সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া চোখের দাগ দূর করার ক্রিমও ব্যবহার করতে পারেন।
রুটিন কেয়ার
সঠিক সময়ে ঘুম, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এ ক্ষেত্রে অনেকটা জাদুর মতোই কাজ করবে। চেষ্টা করতে হবে মন ভালো রাখার। রাতের বেলায় ঘুমোতে যাওয়ার আগে ময়েশ্চারাইজার, আই ক্রিম বা জেল দিয়ে ম্যাসাজ করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। চোখের চারপাশে হালকা করে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন। যাদের চোখের নিচের কালো দাগ গাঢ় হয়ে পড়েছে, তাদের একটু বেশি যত্ন নিয়ে কাজটি করতে হবে। আঙুল দিয়ে আলতো করে চোখের চারপাশে ক্লকওয়াইজ তিনবার এবং অ্যান্টি-ক্লকওয়াইজ তিনবার ম্যাসাজ করতে হবে। তখন অবশ্যই চোখ বন্ধ রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন চোখের মধ্যে কোনোভাবেই ক্রিম না ঢুকে পড়ে। আলু, শসা ও গমের অঙ্কুর পেস্ট বা গ্রেট করে লাগালে খুব ভালো কাজ করবে। এ তিনটি উপাদান আপনি আলাদাভাবেও চোখের ওপর লাগাতে পারেন, আবার একসঙ্গে মিশিয়েও লাগিয়ে রাখতে পারেন। তিনটি উপাদান না পেলে যেকোনো দুটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে দিলেও চোখের কালি অনেকাংশেই দূর হয়ে যাবে।