স্নাতক ১ম বর্ষের ভর্তিতে প্রশ্নবিদ্ধ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

তপন কুমার রায়, বেরোবি প্রতিনিধি:
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈধ ভর্তি কার্যক্রমকে হার মানিয়ে শীর্ষ পর্যায়ে অবস্থান করছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন না করেই মেধাস্থানে নাম আসার অভিযোগ এসেছে । ভর্তি কার্যক্রম চলাকালে জালিয়াতির অভিযোগে এপর্যন্ত সব মিলিয়ে ধরা পড়েছে ১৭ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,জালিয়াতির মাধ্যমে মেধাতালিকায় স্থান লাভ করে ভর্তির সাক্ষাতকার দিতে এসে গত ১৯ মে মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট ভাইভা বোর্ডের শিক্ষকরা আট জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। আটক কৃতরা হলেন, এ ইউনিটের সুন্দরগঞ্জ গাইবান্ধার চাঁদমিয়ার পুত্র আলমঙ্গীর হোসেন, রংপুর জেলার মিঠাপুকুরের আব্দুল মজিদ মন্ডলের পুত্র বায়োজিত রায়হান, বগুড়া জেলার নন্দীগ্রামের আব্দুল হামিদের পুত্র রওশন হায়দার,বি ইউনিটের লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার মোঃআব্বাস এর পুত্র আহসানুল ইসলাম, কুষ্টিয়া জেলার বিসিক শিল্পনগরী এলাকার আব্দুল গনির পুত্র সাজিবুল ইসলীম সজিব, নওগাঁ জেলার ধামরাইহাট এলাকার আইনুল ইসলামের পুত্র মিন্টু হোসেন, সি ইউনিটের টাঙ্গাইল জেলার আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র কায়সার আহম্মেদ, রংপুর জেলার পীরগাছা থানার হাফিজার রহমানের পুত্র রাশেদুল ইসলাম।

এর আগের দিন সোমবার একই অভিযোগে পাঁচ জন ভূঁয়া ভর্তিচ্ছুকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে আটককৃতদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। আটককৃতরা হলো ‘এফ’ ইউনিটে ভর্তিচ্ছু মো: হাসান মিয়া। সে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানার ডাকাতিয়া গ্রামের মো: সবুজ মিয়ার পুত্র। ‘সি’ ইউনিটে ভর্তিচ্ছু আবু বকর সিদ্দিক। সে টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর থানার কাইলা গ্রামের আব্দুর রশিদের পুত্র। ‘বি’ ইউনিটে ভতিচ্ছু মনিরুজ্জামান। সে ফরিদপুর জেলার সালথা থানার উজিরপুর গ্রামের বাবুল মোল্লার পুত্র। ‘সি’ ইউনিটে ভর্তিচ্ছু বাসুদেব রায়। সে পঞ্চগড় জেলার বোদা থানার করুনাময়ী গুপ্তা গ্রামের হরিশ চন্দ্র বর্মনের পুত্র। ‘সি’ ইউনিটে ভর্তিচ্ছু কামরুল হাসান। সে রংপুর জেলার পাগলাপীর এলাকার মাহফুজার রহমানের পুত্র।

এছাড়াও গত ৫ও ৬ ইমে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে বদলি পরীক্ষা ও অসাদুপায় অবলম্বনের দায়ে সর্বোচ্চ এক বছর সহ বিভিন্ন মেয়াদে চারজনকে সাজা দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। সাক্ষাতকারে আটককৃতদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা যায়।

এ দিকে ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিত না হয়েই এক শিক্ষার্থীর মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৫ মে অনুষ্ঠিত কলা অনুষদভূক্ত (এ ইউনিট) এর ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিত না থেকে মানবিক বিভাগ থেকে ১৬১ তম মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয় মোস্তাফিজুর রহমান। যার রোল নম্বর ১৪৬০২৫। তবে অনুষ্ঠিত সাক্ষাৎকারে এই শিক্ষার্থী উপস্থিত হননি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

পরীক্ষায় উপস্থিত না থেকে মেধা তালিকায় নাম আসার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার (অতি:) মো. মোরশেদুল আলম রনি বলেন, বিষয়টি আগে কেউ জানায়নি, পরীক্ষা না দিয়ে রেজাল্ট আসার ব্যাপারে ঐ অনুষদভুক্ত সমন্বয়ক এ ব্যাপারে ভাল বলতে পারবেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। সাক্ষাতকারে ১৩ জন আটককৃতদের ব্যাপারে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, তবে মামলার কপি আমরা এখনও হাতে পায়নি। এখনও যদি কেউ জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করে তবে প্রশাসনের কাছে তাকে ধরা পড়তেই হবে।

উপস্থিত না থেকে কিভাবে মেধা তালিকায় নাম আসল এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কলা অনুষভূক্ত (এ ইউনিটে) এর সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. নাজমুল হক বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এটি কারিগরি কোন সমস্যা হতে পারে।

Comments (0)
Add Comment