নিজস্ব প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে পরিকল্পিতভাবে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে গুজব রটিয়ে, মিথ্যা ফতোয়া দিয়ে এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে একটি ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণি। এ লক্ষ্যে তারা সম্প্রতি জুম’আর খুতবায় হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে নানা গুজব ও মনগড়া তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করছে। তারা হেযবুত তওহীদের সদস্যদের কাফের, মুরতাদ, অমুসলিম ইত্যাদি ফতোয়া দিয়ে তাদেরকে হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় সেখানে বসবাসরত হেযবুত তওহীদের সদস্যবৃন্দ প্রবল নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন।
এ বিষয়ে নিরাপত্তা চেয়ে হেযবুত তওহীদের পক্ষে আদালতে একটি মামলাও করা হয়েছে। তবে তাতে হিতে বিপরীত হতে চলেছে। মামলার পর ওই মামলা তুলে নিতে ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণিটি নানাভাবে হেযবুত তওহীদের নেতৃবৃন্দের প্রতি চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। মামলা তুলে না নিলে এলাকায় থাকতে দেওয়া হবে না, হত্যা করা হবে ইত্যাদি হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে হেযবুত তওহীদ মানবতার কল্যাণে কাজ করে চলেছে। সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতে সারাদেশে ব্যাপক কর্মসূচি পরিচালনা করে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ। এর ফলে যারা সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চায় তাদের স্বার্থে আঘাত লেগেছে। ফলে তারা হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে উঠে-পড়ে লেগেছে। তারা এমনসব অপ-প্রচার চালাচ্ছে যার সাথে হেযবুত তওহীদের দূরতম সম্পর্কও নেই। তিনি জানান, ওই ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণিটি প্রতিনিয়ত তাদেরকে হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি এ ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহতের পাশাপাশি তাদের বিচারের দাবি জানান।
শুধু হবিগঞ্জেই নয় নিজেদের কৃত অপরাধকে আড়াল করতে দেশের অন্যান্য জেলায়ও মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে চলেছে একটি স্বার্থান্বেষী ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণি। যেখানে হত্যা, হত্যার হুমকি, ধর্ষণের হুমকিসহ মারাত্মক সাইবার অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে; সেখানে নিজেদের এসব অপরাধকে আড়াল করতে, আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব কর্মসূচি করে যাচ্ছে তারা। আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে নিজেরাই নানা দাবিতে কর্মসূচির আয়োজন করে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি নোয়াখালী জেলার নাথেরপেটুয়া এলাকায় ‘ঈমান-আকীদা সংরক্ষণ কমিটি’ নামের কথিত একটি সংগঠনের ব্যানারে অনুরূপ একটি মানববন্ধন করে এই শ্রেণিটি। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে ‘ইসলামী আকীদা সংরক্ষণ পরিষদ’ নামের কথিত একটি সংগঠনের ব্যানারে অপর একটি মানববন্ধন করে ওই ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণিটি। এসব মানববন্ধন থেকে তারা হেযবুত তওহীদকে হেয় করে নানা বক্তব্য দিয়েছেন, হেযবুত তওহীদের সদস্যদেরকে কাফের, মুরতাদ, অমুসলিম ইত্যাদি ফতোয়া জারি করেছেন। এমনকি হেযবুত তওহীদের সদস্যদের হত্যা, নারীদেরকে ধর্ষণের হুমকি প্রদানের পাশাপাশি অন্যদেরকেও অনুরূপ কাজে লিপ্ত হওয়ার আহŸান জানানো হয়।
এবিষয়ে হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক মো. মশিউর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ একশ্রেণির ধর্মব্যবসায়ী মিথ্যা কথা বলে, গুজব রটিয়ে সাধারণ মানুষকে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলে। যার ফলশ্রæতিতে সেদিন দুইজনকে পিটিয়ে, চোখ উপড়ে ফেলে, হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা করা হয় এবং পরে তাদের মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলা হয়। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় যখন আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল হচ্ছে, যখন তাদের কেউ কেউ গ্রেফতার হচ্ছেন ঠিক তখন আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি আয়োজন করছে ওই শ্রেণিটি। এছাড়াও তারা তাদের ওয়াজ-মাহফিলে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে নানা বানোয়াট তথ্য ও মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে। তিনি আরও জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ২৪ বছরে দেশ-জাতি-মানবতার কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ। সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, ধর্মব্যবসা, ধর্ম নিয়ে অপরাজনীতি, নারীর অধিকার, মাদক ইত্যাদি সামাজিক সমস্যা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ। অথচ ধর্মব্যবসায়ীরা তাদের মনববন্ধনে সেই হেযবুত তওহীদকেই নিষিদ্ধের দাবি তুলছে। বিষয়টি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও হাস্যকর। তিনি এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এবিষয়ে আমাদের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী আরও সচেতন হবে এবং এধরণের ষড়যন্ত্রকারীদের শাস্তির আওতায় অানবে এমনটাই প্রত্যাশা করছি।