পীরগঞ্জ (রংপুর ) প্রতিনিধি – মেলা। বাঙ্গালী জাতির প্রাণের সাথে জড়িয়ে আছে মেলা কথাটি। নাগরদোলা,পুতুলনাচ,যাত্রাপালা,সার্কাসসহ দেশীয় ঐতিহ্য লালন করা মেলা আজকের প্রজন্মে কাছে নিতান্তই রুপকথার মতো কিংবা বইয়ে পড়া অথবা দাদা-দাদীর মুখে শোনা অবিশ্বাস্য গল্পের মত । মেলার নৌসর্গিক বিনোদন বাঙ্গালী জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করার প্রেরণা যুগিয়েছিল । বাঙ্গালীর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই সংগঠিত হয়েছিল ১৯৭১ রের মুক্তিযুদ্ধ । হাজার বছরের ঐতিহ্য মন্ডিত বাঙ্গালী জাতির পরিচয় বাহক এই মেলা গুলো এখন কালের গর্ভে বিলিন হতে বসেছে ভিনদেশী অপসংস্কৃতি এবং দেশীয় কিছু কুলাঙ্গারদের অনুকরণ প্রবনতায়। নগ্নতার কালো থাবায় মেলা হারিয়ে ফেলেছে তার স্বকীয়তা এবং স্বাতন্ত্র।
রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা এক সময় ছিল মেলার সুতিকাগার। মহর কবিরাজের মেলা, চৌধুরী মেলা ,ভেন্ডাবাড়ি মেলা,খালাশপীরহাট মেলা,লালদিঘী মেলা,শানেরহাট ইত্যাদি মেলা গুলোতে একসময় লাখো প্রাণের সঞ্চার হত । নানান প্রকার বাঙ্গালী খাবারের সমারোহ ছিল,ছিল ঘর সাজানোর আসবাবপত্র,মাটি,পিতল কাসাঁর তৈজসপত্র,নকশিকাঁথা,কৃষিপণ্য,ঘোড়দৌড়, মোরগের লড়াই,নাগরদোলা,পুতুলনাচ,সার্কাস,সপরিবারে দেখার মত যাত্রাপালা সেগুলো আজ ধার করা সংস্কৃতির কাছে মলিন।
অনেক বছর পর পীরগঞ্জের খালাশপীরহাটে আবারও শুরু হতে যাচ্ছে বহুল প্রতিক্ষার আজন্ম লালিত বাঙ্গালীর বাঙ্গালীয়ানা যাদুর মেলা । মেলা বলতে যা বোঝায় এবং সুস্থ বিনোদন বলতে যা বোঝায় তার সবটাই পাওয়া যাবে এখানে এমনটাই নিশ্চিত করেছেন মেলা কর্তৃপক্ষ । উপজেলার মেলা প্রিয় প্রতিটি মানুষের মাঝে শুরু হয়েছে উৎসাহ এবং ব্যপক উদ্দীপনা । মানুষ সুস্থ এবং সামাজিক বিনোদন চায় আর এমন বিনোদনই পাওয়া যাবে যাদুর মেলায় । মেলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন মেলায় কোন প্রকার অসামাজিক এবং অসুস্থ্য কর্মকান্ড দেখা যাবেনা । উপজেলাবাসী সুস্থ ধারার বিনোদন পক্ষে তাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছেন । মেলার আনন্দ এবং সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য সপরিবারে উদগ্রীব হয়ে আছে এলাকাবাসী । মেলার পক্ষে নিজের অবস্থান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জনাব জাইদুল ইসলাাম তিনি বলেন ,আমরা আমাদের জাতিগত ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছি , সুস্থ ধারার মেলা ফিরিয়ে আনতে পারে আমাদের হারানো গৌরব।
এই উপজেলার সর্বস্তরের জনগণের প্রানের দাবি সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে যাত্রা শুরু করুক খালাশপীরের যাদুর মেলা।