মাধবপুর সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ:
ফুটফুটে নিষ্পাপ ছেলে শিশুটি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মিটি মিটি হাসছে, শিশুটি জন্ম নিয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বর এলাকায় রাস্তার পাশে। তাও আবার নাম পরিচয় বিহীন এক পাগলীর গর্ভে। গতকাল সকালে সন্তান সম্ভবা এক পাগলি মায়ের প্রসব বেদনার গগনবিদারী চিৎকার ভারি করে তুলছিল জগদীশপুর মুক্তিযুদ্ধা চত্বর এলাকা চিৎকারের শব্দ শুনে ছুটে গিয়েছিলেন কিছু স্থানীয় ব্যক্তি। এটা নির্মম জীবন বাস্তবতায় এক ফুটফুটে মানবশিশুর পৃথিবীতে আসার গল্প।
গত রোববার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা মাধবপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মনজুর আহসানকে ফোনে জানান, উপজেলার জগদীশপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বর এলাকায় সন্তান সম্ভবা এক পাগলি মায়ের প্রসববেদনার গগণবিদারী চিৎকারের সংবাদ খবর পেয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মনজুর আহ্সান মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে নার্স ও এম্বুলেন্সসহ এসে মা ও ছেলেকে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এসময় ঢাকা থেকে হবিগঞ্জ যাওয়ার পথে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব জাকিয়া পারভীন, হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ নুরুল হক, সহকারী পরিচালক ডাঃ রওশন জাহান এবং আখতার জাহান খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে নেমে মা ও নবজাতকের খবর নেন।
স্থানীয়দের মতে, প্রায় কয়েক দিন ধরে মানসিক অসুস্থ অবস্থায় জগদীশপুর এলাকায় ঘোরাঘুরি করতেন। প্রসববেদনার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মনজুর আহসানকে সংবাদ দিলে তিনি নবজাতকসহ মা’কে উদ্ধার করে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
বর্তমানে মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ আছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইশতিয়াক আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছি। তাৎক্ষনিকভাবে জগদীশপুর ইউনিয়নের স্বাস্থ্য কর্মীরা নবজাতক ও মাকে সেবার ব্যবস্থা করেছে। এর মধ্যেই খবর পেয়ে মাধবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. শাহজাহান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুর আহসান, মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আঃ রাজ্জাক, পুলিশ পরিদর্শক ওসি তদন্ত আতিকুল ইসলাম, শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান, সমাজ সেবা কর্মকর্তা আশরাফ আলী নবজাতকসহ পাগলিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে দেখে গেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুর আহ্সান জানান, নবজাতক ছেলে সন্তানটিকে দত্তক নিতে ইতোমধ্যেই অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, আমরা প্রয়োজনে শিশুটিকে চাইল্ডহোমে দিয়ে দেওয়ার চিন্তা করছি।