১১ মাসের শিশুর ১৯ ঘন্টা হাজতবাস: ওসি ও এটিএসআই এর আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ

মনিরুজ্জামান সুমন, ঝিনাইদহ: মহেশপুর থানা হাজতে ১১ মাসের শিশু আলিফ ওরফে রয়েলকে তার মায়ের সাথে ১৯ ঘন্টার হাজতবাসের কারণ জানতে চেয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারী করেছেন ঝিনাইদহের চিফ জুডিশিয়াল ম্যজিষ্ট্রেট জাকির হোসেন। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিদুল ইসলাম শাহীন এবং মা ও শিশু গ্রেফতারকারী পুলিশ কর্মকর্তা এটিএসআই আমির হোসেনকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। রোববার বেলা ২.৪০ টায় আদালতের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মহেশপুরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিদুল ইসলাম শাহিন সংশ্লিষ্ট কোর্ট ইন্সপেক্টর আব্দুল বারীর কাছ থেকে গ্রহন করেন। তিনি এ সময় ঝিনাইদহে ছিলেন। ঝিনাইদহের কোর্ট ইন্সপেক্টর আব্দুল বারী আদালত থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারীর কথা স্বীকার করেন।

তিনি বলেন আদালতের আদেশ মহেশপুর থানায় পাঠানো হয়েছে। আদালতের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে এ মাসের ১৭ তারিখে মহেশপুর থানার বাসিন্দা রাজু আহম্মেদকে গ্রেফতার করার জন্য পরিচালিত অভিযানের সময় তার স্ত্রীর ও শিশুপুত্র ১১ মাস বয়সের রাসেলকে গ্রেফতার করে থানা হাজতে আটক রাখা হয় । ঘটনার ১৯ ঘন্টা পরে ৪২ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদের থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। বিষয়টি গত ১৮ তারিখে সংবাদ পত্রে প্রকাশিত হয়।
আদালতের আদেশে আরো বলা হয়েছে আসামী না হওয়া সত্বেও রাজুর স্ত্রী ও ১১ মাসের শিশু পুত্রকে কোন ক্ষমতাবলে থানা হাজতে ১৯ ঘন্টা আটক রাখা হলো তা আদেশ প্রাপ্তির ৪৮ ঘন্টার মধ্যে মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহিদুল ইসলাম ও এএসআই অমির হোসেনকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারন দর্শানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশ অমান্য করা হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনের কার্যধারায় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে মর্মেও আদেশ নামাতে উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য গত বুধবার রাজু নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে গিয়ে পুলিশ তাকে না পেয়ে তার ১১ মাস বয়সী শিশু আলিফ ওরফে রয়েল এবং স্ত্রী লিপি খাতুনকে আটক করে নিয়ে আসেন। এরপর থানায় আটকে রেখে ১৯ ঘন্টা পর পরদিন বৃহস্পতিবার বিকালে মুক্তি দেয়। থানার গ্রীল ঘেরা বারান্দায় ঘুরে বেড়ানো শিশু আলিফ ওরফে রয়েলের ছবি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। অভিযোগ ওঠে টাকার বিনিময়ে শিশু ও তার মাকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। পুলিশ অবশ্য বরাবর টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে আসছে।

ঘটনাটি তদন্তে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ মহেশপুরের নাটিমা ও ভালাইপুর গ্রাম পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি জানান, পত্রপত্রিকায় শিশু রয়েলের যে ছবিটি ছাপা হয়েছে সেটা গারদের নয়, থানার বারান্দার। বারান্দায় হেফাজতে রাখা অবস্থায় ওই ছবি তোলা হয়েছে। তিনি আরো জানান, মা লিপি খাতুন ও শিশু রয়েলকে ছাড়ানোর জন্য টাকা লেদদেনের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর

Comments (0)
Add Comment