বিডিপি ডেস্ক:
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ১৫ বছর ধরে মাটির গর্তে শিকলবন্দি থাকা রবিউল মোল্যাসহ তার পরিবারের খোঁজ খবর নিলো ফরিদপুর জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আলীমুজ্জামান (বিপিএম সেবা) এর নির্দেশে বোয়ালমারী থানা পুলিশ। একই সাথে তার চিকিৎসার সমস্ত দায়ভার নিল জেলা পুলিশ সুপার ও বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনর্চাজ মোহাম্মদ নুরুল আলম।
শনিবার (৩১ জুলাই) দুপুর ২ টার সময়ে থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নুরুল আলম অসুস্থ রবিউল মোল্যার বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন এবং যাবতীয় খোঁজ খবর নেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের পশ্চিম চরবর্ণি গ্রামের ৩৫ বছর বয়সী মো. রবিউল মোল্যা নামে এক ব্যক্তির সাথে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সে দীর্ঘ ‘১৫ বছর’ ধরে মাটির গর্তে শিকলবন্দি রয়েছেন। গত ছয়-সাত বছর আগে একবার জ্বর হয় তার। জ্বর হওয়ার পরে হঠাৎ করেই তার শরীরের হাত-পা শুকিয়ে যেতে থাকে। পরে রবিউল অসুস্থ হয়ে যান।
অসুস্থ রবিউলের মা বলেন, ওর বাবা ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। তিন ভাইয়ের মধ্যে রবিউল মোল্যা সংসারের বড় ছেলে। উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার সামর্থ্য নেই; তাই আমাদের সাধ্যমত রবিউলকে ডাক্তার-কবিরাজ দেখাই। তারপরেও রবিউল সুস্থ বা স্বাভাবিক হয়নি। ওর শরীরে শীত-গরম বলতে কোনো অনুভূতি নেই। রবিউলের মা আরো বলেন, ওকে ছেড়ে দিলে যেখানে সেখানে চলে যায় বলে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। মাটির গর্তে রাখার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রবিউলকে যে ঘরে শিকলবন্দি করে রাখা হয়েছে সেই ঘরের মাটির মেঝে হাত দিয়ে খুঁড়ে খুঁড়ে নিজেই তৈরি করেছে এই বিশাল গর্ত।
বোয়ালমারী থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হলে মানবিক ফরিদপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান (বিপিএম সেবা) ও আমাদের নজরে এই ঘটনা আসে। তারপর আমরা পুলিশ সুপারের নির্দেশে রবিউলসহ তার পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছি এবং পুলিশের পক্ষ থেকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছি। এছাড়া রবিউলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলেও তিনি জানান।