নিউজ ডেস্ক:
বিয়ের সময় ও বিয়ের পরে বসতবাড়ি বিক্রি করে দফায় দফায় যৌতুকের ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার পরেও যৌতুকের আরও চার লাখ টাকার জন্য স্ত্রীকে চাপ দিতে থাকেন স্বামী রকিবুল গাজী (৪০)। যৌতুকের টাকা না দিতে পারায় মায়ের সামনে স্ত্রী দিপালী বেগমকে (৩৫) হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন রকিবুল। মাথায় আঘাতের পর মাথার খুলি ফেটে মগজ বের হয়ে যায়।
গত ২ সেপ্টেম্বর নড়াইলের কালিয়া থানার উড়শী গ্রামে এ লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের পর রকিবুল গাজী সাভারে তার বোনের বাসায় আত্মগোপন করেন। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বুধবার (০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১) ভোরে অভিযান চালিয়ে সাভারের ধামসোনা এলাকা থেকে রকিবুল গাজীকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির একটি দল।
বুধবার (০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১) দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর। তিনি বলেন, নিহত দিপালী বেগমের সঙ্গে ছয় বছর আগে বিয়ে হয় রকিবুল গাজীর। বিয়ের সময় রকিবুল যৌতুক হিসেবে নগদ পাঁচ লাখ টাকা নেন। কিছুদিন পর আবার দশ লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। কিন্তু ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা তা দিতে অস্বীকার করেন। এরপর থেকে ভিকটিমের ওপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। নিহতের মা তা জানতে পেরে বসতবাড়ি বিক্রি করে রকিবুলকে ১০ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দেন। এই টাকা দিয়ে গ্রেপ্তার রকিবুল বাড়ি, ফার্নিচারের দোকান, কাঠের ডিজাইনের মেশিন কিনে ব্যবসা শুরু করেন। এরপর তিনি পুনরায় আরও চার লাখ টাকা দাবি করেন। এই টাকা আদায়ের জন্য ভিকটিমের ওপর পুনরায় নির্যাতন শুরু হলে ভিকটিমের মা বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য মেয়ের বাড়িতে যান।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, পরে বিষয়টি নিয়ে কলহের জের ধরে রকিবুল দিপালীর মায়ের সামনে হাতুড়ি দিয়ে দিপালীকে মাথায় আঘাত করলে মাথার খুলি ফেটে মগজ বের হয়ে যায়। আশপাশের মানুষ চিকিৎসার জন্য পল্লী চিকিৎসককে ডেকে আনলে তিনি জানান যে, দিপালী মারা গেছেন। বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর আরও বলেন, গত ২ সেপ্টেম্বর নড়াইলের কালিয়া থানার উড়শী গ্রামে এই লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের পর রকিবুল গাজী সাভারে তার বোনের বাসায় আত্মগোপন করেন। এরপর নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বুধবার (০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১) ভোরে অভিযান চালিয়ে সাভারের ধামসোনা এলাকা থেকে পলাতক রকিবুল গাজীকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির একটি দল। এদিকে, জামালপুরের মেলান্দহ এলাকায় পরকীয়ার জেরে স্ত্রীকে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন স্বামী মো. রুবেল মিয়া (৪২)। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, প্রায় দুই বছর আগে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে করেন নিহত মোসলিমা আক্তার ময়না (৩৮) ও মো. রুবেল মিয়া (৪২)। বিয়ের পর থেকে রুবেল শ্বশুরবাড়িতে ঘর জামাই হিসেবে অবস্থান করে এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করে আসছিলেন। গত ২০ আগস্ট রাতে পরিকল্পনা করে নিজের স্ত্রীকে হত্যা করেন রুবেল। হত্যাকাণ্ডের পরপরই ঘাতক রুবেল অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপন করেন। এই ঘটনার পর সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে।
সিআইডিএ এলআইসির একটি চৌকশ দল ঢাকার ডেমরা থানার ইসলামবাগ, বাশেরপুল এলাকা থেকে মামলার একমাত্র এজাহারনামীয় আসামি রুবেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামি অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে তার পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল বলে স্বীকার করেন। ওই সম্পর্কের কথা তার স্ত্রী জানতে পারলে প্রায়ই তাদের ঝগড়া-বিবাদ লাগতো। এ কলহের কারণেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটান রুবেল।