দেশে করোনা সংক্রমণ রোধে ২১ কোটি টিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
শনিবার কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ, অক্সিজেন সংকট, হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা ও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি শীর্ষক সভায় বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আগামী বছর পর্যন্ত এই টিকাগুলো পর্যায়ক্রমে দেশে আসবে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, এর মধ্যে এখন আমাদের হাতে আছে ৩ কোটি চায়নার টিকা, ৭ কোটি কোভ্যাক্সের টিকা, ১ কোটি রাশিয়ার টিকা, ৩ কোটি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ও ৭ কোটি জনসনের টিকা আসবে। এই টিকা পেলে ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা ব্যবস্থা করা যাবে।
ফ্রন্ট লাইনের যোদ্ধাদের মধ্যে যারা আছেন তাদের আগে টিকার আওতায় আনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে সেনাবাহিনী, শিক্ষক ও চিকিৎসকরা আছেন। আর তাদের পরিবারের ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকেই টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সুরক্ষা অ্যাপে টিকা নিবন্ধন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, যারা সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে পারছেন না, তাদের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, তারা জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়েই টিকা নিতে পারবেন। পরবর্তীতে তারা সুরক্ষা অ্যাপে টিকার নিবন্ধন করতে পারবেন।
দেশে করোনার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউ চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, হাসাপাতালে রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। এর মধ্যে খালি আছে মাত্র দুই হাজার বেড। সরকারি ও বেসরকারি মিলে ঢাকায় ৫ হাজার বেড আছে। আর সারাদেশে ১৫ হাজার বেড আছে। আর ঢাকায় আইসিইউ বেড আছে ৮’শত। সারাদেশে আছে ১ হাজার ২’ শ। এরপরও প্রতিদিনই বেড বাড়ানো হচ্ছে। আমরা এবং আপনারাও (প্রাইভেট হাসপাতাল) বেড বাড়ানোর চেষ্টা করছি।
দেশে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন দেশে সংক্রমণ হার ৬ থেকে ৭ গুন বেড়েছে। এরপরও আমরা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। আর মৃত্যুর সংখ্য্যা ১০ গুন বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতেও সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের আন্তরিকতায় আমরা স্বাস্থ্য সেবা ভালো দিতে পারছি।
সেবার পাশাপাশি টিকাও জরুরি মন্তব্য করে জাহিদ মালেক বলেন, সবার আগে আমরা টিকা পেয়েছিলাম। ভারতের সাথে আমাদের ৩ কোটি টিকার চুক্তি ছিলো। কিন্তু আমরা মাত্র ১ কোটি টিকা পেয়েছি।
ঈদে মানুষ বাড়ি যাওয়ার কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না, সামাজিক দূরত্ব মানছে না এবং আমরা সকলকে টিকা দিতে পারছি না, একারণে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১ কোটির বেশী টিকা আমাদের হাতে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে আরো ৩০ লাখ টিকা আমাদের হাতে আসবে। আর আগষ্টে ফাইজারের টিকা আসবে। সবমিলে আমাদের হাতে ২ কোটি টিকা থাকবে।
আগামী ২৬ থেকে ২৭ তারিখের মধ্যে সিনোফার্মের আরো ৩০ লাখ টিকা দেশে আসবে বলেও জানান মন্ত্রী।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মুবিন খানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ড. আনোয়ার হোসেন খান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ