খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত ‘খ’ অঞ্চলের বিচারক নুসরাত জাবিন শুনানি শেষে বুধবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তার এ জামিন মন্জুর আদেশ দেন। এ মামলার পুলিশের তদন্ত প্রতিবেন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত তার জামিন বহাল থাকবে বলে আদালত জানিয়েছেন।
এ মামলায় আসামী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী সাংবাদিক আব্দুল লতিফের অন্তবর্তীকালীন জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ১০ হাজার টাকা বন্ডে তার জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত তার জামিন বহাল থাকবে বলে আদালত আদেশে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, শুনানীর সময় আব্দুল লতিফকে আদালতে হাজির করা হয়নি। তার অনুপস্থিতিতে শুনানির শেষে জামিন আদেশ দেয়া হয়েছে। এ আদেশের কপি কারাগারে যাওয়ার পরই তিনি মুক্ত হবেন। শুনানীতে তিনি ছাড়াও আব্দুস সাত্তার, মোল্লা মতিয়ার রহমান, অশোক সিংহসহ আরও কয়েকজন আইনজীবী অংশ নেন বলে সুজিত অধিকারী জানান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২৯জুলাই শনিবার খুলনার ডুমুরিয়ায় প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পক্ষ থেকে কিছু পরিবারের মাঝে হাঁস, মুরগী ও ছাগল বিতরণ করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ।
বিতরণের পর রাতে জুলফিকার আলী নামে দক্ষিণ ডুমুরিয়া গ্রামের এক ব্যক্তির পাওয়া একটি ছাগলের মৃত্যু হয়। এ সংক্রান্ত খবর ফেসবুকে শেয়ার করার অভিযোগে সোমবার রাতে সাংবাদিক আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা করেন ডুমুরিয়ায় কর্মরত আর এক সাংবাদিক সুব্রত ফৌজদার। ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস বলেন, মামলার এজাহারে বলা হয়েছে প্রতিমন্ত্রীর বিতরণ করা ছাগল মারা যাওয়া সংক্রান্ত সংবাদ ফেসবুকে শেয়ার করায় প্রতিমন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ জন্য লতিফের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা করা হয়েছে। মামলার সঙ্গে কিছু নথি জমা দিয়েছেন বাদী। মামলার পর প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে আসামি লতিফকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার রাতে মামলা দায়েরের কয়েক ঘন্টা পর একদল পুলিশ ডুমুরিয়ার বাসভবন থেকে সাংবাদিক আব্দুল লতিফকে গ্রেফতার করে এবং মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। বুধবার শুনানী শেষে আদালত সাংবাদিক লতিফকে অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন।
এদিকে সাংবাদিক লাতিফকে গ্রেফতারের ঘটনায় খুলনার সাংবাদিক সমাজ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। জামিন শুনানীর সময় অনেক সাংবাদিক আদালতে উপস্থিত ছিলেন।