ফারুক আহমেদ, মাগুরা: বড় অফিসারের অর্ডার মান্য করতে যেয়ে মাগুরার হাজিপুর গ্রামের সৈনিক (বাধ্যতামূলক অবসর) নুরুজ্জামান টিপু নারায়ণগঞ্জের ৭ খুন মামলায় জড়িয়ে প্রায় ১ বছর ধরে জেল খাটছেন এমনটাই জানালেন টিপুর স্ত্রী ফিরোজা হাবিব। দুটি শিশু সন্তান নিয়ে টিপুর স্ত্রী ফিরোজা হাবিব এখন অসহায় দিন কাটাচ্ছেন। আর কতদিন এভাবে বিচারের আশায় থাকতে হবে তা ভেবে শংকিত ফিরোজা সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ফিরোজা হাবিব জানান, তার স্বামী নুরুজ্জামান দীর্ঘ ১৩ বছর অত্যন্ত সুনাম ও সততার সঙ্গে চাকরী করছেন। ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৪ সালে তিনি র্যাব সদর দপ্তরে যোগদান করেন। সেখানে ট্রেনিং শেষে গত ৬ মার্চ ১৪ সালে নারায়ণগঞ্জের আদমজিতে যোগদান করেন। ওই বছর ১৩ এপ্রিল তার নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পে পোষ্টিং হয়। সেখানে তিনি গেট ডিউটির দায়িকত্ব পালন করেন। নারায়ণগঞ্জ পোষ্টিংয়ের মাত্র ১৩ দিনের মাথায় ২৭ এপ্রিল সেখানে মর্মান্তিক ৭ খুনের ঘটনা ঘটে। ওই দিন নুরুজ্জামান শুধুমাত্র সাধারণ টহলের দ্বায়িকত্বেই ছিলেন। এ সময় ঘটে যাওয়া খুনের ঘটনাসমূহের কোনক্রমেই জড়িত ছিলেন না বলে ফিরোজা হাবিব দাবী করেন। তিনি দাবী করেন ১৪ই জুন তারিখে কোনপ্রকার সরকারি সুযোগ সুবিধা না দিয়েই নুরুজ্জামানকে অবসরে পাটানো হয়। এ সময় তিনি বাড়িতে চলে আসেন। ওই বছর ২ ডিসেম্বর ডিবি পুলিশ তাকে মাগুরা থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর ১ বছর পেরিয়ে গেলেও ওই মামলার কোন প্রকার অগ্রগতি হয়নি বলে জানান তিনি। মামলার ধীর গতির কারনে তার স্বামীর জামিন কিংবা দ্রæত রায় পাওয়ার কোন সম্ভাবনাই দেখতে পাচ্ছেন না তিনি।
ফিরোজা জানান, দুই ছেলে নিয়ে এখন অসহায় দিন কাটাচ্ছি। তিনি বলেন আমার বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ কি? আমার বড় ছেলে মোঃ ফাহিম বিন জামান এবার পি.এস.সি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ+ পেয়েছে। আমি কি ভাবে তার লেখাপড়ার খরচ যোগাব। ছোট ছেলেটির বয়স মাত্র ৪ বছরের। সবচেয়ে বড় কথা কি অপরাধে আমার স্বামীর এই অবস্থা সেটাইতো জানলাম না। আমি ও আমার নাবালক সন্তানরা ঘটনার সঠিক বিচার এবং আমার নির্দোষ স্বামীর দ্রুত বিচার বিচার শেষে মুক্তি ও তার যোগ্য পাওনা ফেরত চাই।ফিরোজা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একান্তভাবে জানাতে চাই আমার স্বামী যদি দোষী হয়ে থাকে তবে তাকে শাস্তি দেওয়া হোক। কিন্তু বিচারের দীর্ঘসূত্রিতায় দীর্ঘদিন ধরে তিনি যেন জেলে থাকতে বাধ্য না হন এই ব্যবস্থাটি অত্যন্ত করুন। আমার অসহায় শিশুদের মুখের দিকে তাকিয়ে আপনার কাছে এই আমার একমাত্র অনুরোধ।