জানা গেছে, মেহেরপুর জেলা শহরের নায়েব বাড়ি মন্দিরের পুরোহিত শ্রী সঞ্জয় কুমার মূখার্জি (জিৎ মুখ্যার্জি) পুরোহিতের দায়িত্ব ছেড়ে নিজ গ্রামের বাড়ি চলে গিয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের একটি গ্রামে। মোবাইল ফোনে জিৎ মুখার্জির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঝিনাইদহে পুরোহিত হত্যার পর বাবা-মার চাপে মন্দির ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। নিজ বাড়িতেও তিনি আতঙ্কিত বলে জানান।’
মুজিনগরের ভবের পাড়া গীর্জার সহকারী ফাদার ওমিও জানান, সারাদেশে এ ধরণের হত্যাকান্ডে খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতি কাজ করাটা স্বাভাবিক। তবে পুলিশ প্রশাসন সকল ধরণের সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুরে অবস্থিত স্বামী পরমহংসদেব নিগমানন্দের আশ্রম। এই আশ্রমের সেবায়েত মহারাজ অখানন্দ চরম আতঙ্কিত হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, কি করবো বুঝতে পারছি না ?’
জেলা শহরের বড়বাজারের ঐতিহ্যবাহি কালিমন্দিরের পুরোহিত তপন বন্দোপ্যাধ্যায় বলেন, ‘চরম ভয়ে আছি । সকালে মন্দিরে পূজা দিতে ভয় লাগে নির্জনতার কারণে। তবে পুলিশ প্রশাসন তাকে আতঙ্কিত না হবার জন্য বলেছে। তারপরেও ভরসা পাচ্ছিনা।’
মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ও জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট পল্লভ ভট্টাচার্য নিজেকে চরম আতঙ্কিত দাবী করে বলেন, ‘মৌলবাদি চক্র সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। যা এখনই মোকাবেলা না করলে ভয়ঙ্কর পরিণতির শিকার হতে হবে। যা কারোরই কাম্য নয়।’
জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ডা. রমেশ চন্দ্র নাথ বলেন, দেশে যেভাবে নিরীহ পূজারীদের হত্যা করা হচ্ছে সেটা অবশ্যই ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে। কি কারণে এ সকল নিরীহ মানুষকে মারা হচ্ছে তা পরিষ্কারও হচ্ছে না। তবে এ ঘটনায় এখানকার হিন্দুরা চরম আতঙ্কিত বলে তিনি জানান। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান আশা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে মেহেরপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) হামিদুল আলম জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘুদের সর্বাত্মক নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। তবে গ্রাম ও শহরের সনাতন ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের আশপাশে অপরিচিত সন্দেহজনক লোকজন দেখলে, আটক করে পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে।’