চট্টগ্রাম ব্যুরো: অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোতে মর্যাদার অবনমনের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে এক ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি পালন করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা। রবিবার সকাল ১০ টায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ গেইট গেদারিং, অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি পালন করেন চট্টগ্রামের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা। এ সময় সর্বজনাব বরকত উল্লাহ (সহকারী ব্যবস্থাপক, ক্যাশ), বৈশালী রহমান (উপপরিচালক), তামজিদ হোসাইন (উপপরিচালক), আমির হোসেন (যুগ্মপরিচালক), ইকবাল হোসাইন (যুগ্মপরিচালক), মো. ইদ্রিছ মিয়া (যুগ্মপরিচালক) এবং অসীম কুমার চৌধুরী (যুগ্মপরিচালক) সহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল, চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক জনাব মো: ইদ্রিছ মিয়া বলেন, “৮ম জাতীয় বেতন কাঠামোর গেজেটে বাংলাদেশ ব্যাংককে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা মনিটারি অথরিটি হিসেবে পৃথকভাবে সংজ্ঞায়ন, নির্বাহী পরিচালক পদকে জাতীয় বেতন কাঠামোয় ১ম গ্রেডে উন্নীতকরণ এবং সহকারী পরিচালক হিসেবে প্রবেশ পদ ৯ম গ্রেডে অবনমনের পরিবর্তে ৮ম গ্রেডে নির্ধারণ এই তিন দফা দাবিতে আমরা কর্মসূচি পালন করছি। আজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। এ-শুভদিনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা কালোব্যাজ ধারণ থেকে বিরত আছি। আগামী ১১-১২ জানুয়ারি সকাল ১০টা হতে দেড়ঘণ্টা এবং ১৩-১৪ জানুয়ারি সকাল ১০টা হতে দু’ঘণ্টা একইভাবে গেইট গেদারিং, অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি পালন করা হবে।”
সংগঠনের সভাপতি জনাব অসীম কুমার চৌধুরী বলেন, “৮ম জাতীয় পে-স্কেলে প্রায় শতভাগ বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা থাকলেও কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। এ হতাশা ও ক্ষোভ সম্মানীর জন্য নয়, মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান ও অধিকার নিশ্চিত করার জন্য। পে-কমিশনের প্রধান ড. ফরাসউদ্দিন যুক্তিসহকারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর সুপারিশ করেছিলেন যার প্রতি ভ্রুক্ষেপও করা হয়নি। বেতন কাঠামোর গেজেট প্রণয়নে আইনমন্ত্রীসহ অন্যান্য মন্ত্রীদের সুপারিশ এমনকি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিকে অবজ্ঞা করে বিভিন্নভাবে বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে। অন্যান্য অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠানের সাথে কেন্দ্রীয় ব্যাংক-কে এককাতারে সংজ্ঞায়ন করে মুদ্রানীতির অভিভাবক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক-এর মর্যাদার অবনমন করা হয়েছে। এই ষড়যন্ত্র সফল হলে বাংলাদেশ ব্যাংক মেধাশূণ্য হয়ে পড়বে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা অপরিসীম। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মেধাশূণ্য হয়ে পড়লে দেশের অর্থনীতিতে তার প্রভাব হবে অত্যন্ত বিরূপ। এ কর্মসূচি সরকারের বিপক্ষে নয়, অর্থের জন্য নয়; ষড়যন্ত্রমূলক বৈষম্যের বিরূদ্ধে এবং মর্যাদার জন্য।”
যৌক্তিক দাবী আদায়ের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কালোব্যাজ ধারণ, অবস্থান কর্মসূচি, মানববন্ধন, প্রতীকী কলম বিরতি পালন করা হয়েছে। ১৪ জানুয়ারি ২০১৬ এর মধ্যে দাবী আদায় না-হলে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলেও নেতৃবৃন্দ জানান। ইতোমধ্যে গত ২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল, প্রধান কার্যালয় কর্তৃক যৌক্তিক সময়ে দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।