জমি নিয়ে সংঘর্ষ: চুয়াডাঙ্গায় বোমা হামলায় নিহত দুই

চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বিরোধপূর্ণ গঙ্গাদাসপুর গ্রামের ভূমিহীনপাড়ায় ভয়াবহ বোমা হামলায় দুইজন নিহত হয়েছে। সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৬ টার দিকে ভূমিহীন পরিবারের উপর ভয়াবহ এ হামলা চালানো হয়। এসময় গ্রামের টিপুর চায়ের দোকানে বসে ছিলেন মোহাম্মদ আলীসহ কয়েকজন। এ সময় কে বা কারা পরপর ৩-৪টি বোমা ছুড়ে মারে। এতে মোহাম্মদ আলী ঘটনাস্থলেই মারা যান।

উক্ত ঘটনায় আহত শাহাবুদ্দিন যশোর হাসপাতালে ভর্তির পর রাত ১০টার দিকে মারা যায়। তার স্ত্রী মালেকার জীবনও সংকটপন্ন বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।  এ ঘটনায় দুই মহিলাসহ আহত হয়েছেন আরো ৫ জন। ঘটনার পর পর পলায়নকালে উত্তেজিত গ্রামবাসী মনিরুলের স্ত্রী ইসমত আরাকে (৩৫) ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৬২ ভূমিহীন পরিবারের ১১৬ বিঘা জমি নিয়ে গ্রামের একটি পক্ষ গোলদার গ্রুপের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ভূমিহীন পরিবারের নেতৃত্বে রয়েছেন হানেফ আলী ও শাহাবুল ও গোলদার গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছে সীমান্ত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল মালেক মোল্লা।
ভূমিহীন পরিবারের নেপথ্যে রয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হুইপ সেলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলনু এমপি ও গোলাদার গ্রুপের নেপথ্যে নেতৃত্ব রয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর । ২০১২ সালে গোলদার গ্রুপ হামলা চালিয়ে ভূমিহীন ৬২টি পরিবারকে বাড়ি ছাড়া করে। এ হামলায় সে সময় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়। দীর্ঘ ৩ বছর হুইপ সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের নির্দেশে ৬২টি পরিবার গত বছরের জুন মাসে বাড়ি ফিরে বসবাস শুরু করে।
এ অবস্থায় আজ ভূমিহীন পরিবারের উপর আবার হামলা চালানো হয়। আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মালেক মোল্লার ছেলে মিল্টন ও বাদলের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। হামলাকারীরা শাহাবুদ্দীন ও মোহাম্মদ আলীর বাড়ি এবং হানেফের চায়ের দোকানে একযোগে এ হামলা করে ।
এসময় ভোজালীর আঘাতে মোহাম্মদ আলীর নাড়ি-ভূড়ি বেরিয়ে পড়ে এবং বোমার আঘাতে শাহাবুদ্দিনের ডান পা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। দুর্বৃত্তরা আহত শাহাবুদ্দিনের ক্ষতিগ্রস্থ পা কেটে নিয়ে যায়। হামলায় আহত নিহত শাহাবুদ্দিনের স্ত্রী মালেকা খাতুন (৫৫), আবু বকর সিদ্দিক ওরফে কালনার ছেলে মোমিনুর রহমান (৪২), নিহত মোহাম্মদ আলীর ভাই আব্দুল গফুর (৩৫), মৃত ফরজ মন্ডলের ছেলে আমির হোসেন (৪৪) ও মকছেদ আলীর স্ত্রী সুরাতুন নেছাকে (৮৫)। জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। জীবননগর হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসক মোহাম্মদ আলীকে মৃত ঘোষনা করেন এবং যশোর হাসাপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০ টার দিকে শাহাবুদ্দিন মারা যায়। গঙ্গাদাসপুরের বিরোধপূর্ন ১১৬ বিঘা জমির দখল নিতে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মালেক মোল্লার ছেলে মিল্টন ও রেজাউল গোলদারের ছেলে বাদলের নেতৃত্বে গোলদার গ্রুপের লোকজন এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করা।
এসএসপি সার্কেল সুফি উল্লাহ, ইউএনও নুরুল হাফিজ ও ওসি হুমায়ুন করীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

Comments (0)
Add Comment