কলকাতায় তিন খুনের কারন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত এলাকায় এক উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের মা ও দুই যমজ ছেলে খুনের ঘটনায় সিংহলি নারীর স্বামী নিল ফনসেকা জানিয়েছেন, ১৪ জানুয়ারি তার এবং জেসিকার বিবাহবার্ষিকী ছিল। শুক্রবার রাতেও পার্ক স্ট্রিটের এক অভিজাত ক্লাবে পার্টি করতে গিয়েছিলেন তারা। সেখান থেকে ফেরার পরেই শুরু হয় প্রবল ঝগড়া। তারপরই খুন বা খুনোখুনি।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিল জানিয়েছেন, ঝগড়ার মধ্যেই নাকি দুই ছেলেকে খুন করে বসেন জেসিকা। এর পর তিনি খুন করেন জেসিকাকে। জেসিকার মারা ছুরিতেই তার গলা কেটেছে বলেও দাবি করেছেন নিল।

শুক্রবার রাতে যে ওই ফ্ল্যাটে প্রচণ্ড ঝগড়াঝাটি চলছিল তা প্রতিবেশীরাও জানিয়েছেন। কিন্তু কী নিয়ে অশান্তি? প্রতিবেশীদেরই কেউ কেউ বলছেন, নিলের কোনও এক বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে মাঝেমধ্যেই চেঁচামেচি, ঝগড়া কানে এসেছে তাদের। সেই দ্বিতীয় নারী কি নিলের শ্যালিকা শাবানা? সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।

বছর তিরিশের অবিবাহিত শাবানার নিজের পরিবার কলকাতাতেই থাকে। শনিবার সকালে এই হত্যাকাণ্ডের কথা জানার পর, শাবানা তার ভাই জাভেদকেই প্রথম ডেকে পাঠান। তিনি এসেই জামাইবাবু নিলকে স্থানীয় এক নার্সিং হোমে ভর্তি করেন। কড়েয়া রোডে নিজের পরিবারের সঙ্গে না থেকে শাবানা কেন দিদি-জামাইবাবুর সঙ্গে থাকতেন তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে, শাবানাকে নিয়েই নিল আর জেসিকার মধ্যে বিবাদ চলছিল কি না।

জেসিকা আর তাদের যমজ ছেলের নৃশংস খুনের কথা প্রথম জানা যায় সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ। পুলিশ আসে সকাল ন’টা দশে। ইতিমধ্যেই নিলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ ঘরে ঢুকে দেখে, খাটের উপর পড়ে আছে তিন জনের লাশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, ভারী কিছু দিয়ে আঘাত এবং ধারাল অস্ত্রের কোপেই মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। কিন্তু কে কাকে খুন করল? সেটাই এখন পুলিশের কাছে সব খেতে বড় প্রশ্ন। নিলের দাবি, জেসিকা খুন করেছে দুই ছেলেকে। বদলা নিতে তিনি মেরেছেন জেসিকাকে। আর তিনি নিজে জখম হয়েছেন জেসিকার আঘাতে। কিন্তু পুলিশ তদন্তে নেমে অনেক অসঙ্গতি খুঁজে পাচ্ছে এই বক্তব্যের মধ্যে।

সেক্ষেত্রে ঠান্ডা মাথায় স্ত্রী আর দুই ছেলেকে খুনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। তা হলে নিলকে আঘাত করল কে? বাঁচতে চেয়ে জেসিকা বা দুই ছেলের কেউ? না কি পুলিশকে ভুল পথে চালাতে নিল নিজেই নিজেকে আহত করেছেন! এও কি সম্ভব? অসম্ভব নয় একেবারেই, মনে করছেন পুলিশ কর্তারা। সূত্র আনন্দবাজার।

Comments (0)
Add Comment