সিরিয়ার মাদায়ায় মানুষ ঘাস-লতা-পাতা খেয়ে বেঁচে আছে

লেবাননের বৈরুতে জাতিসংঘ সদরদপ্তরের সামনে গত ডিসেম্বর মাসে প্ল্যাকার্ড নিয়ে সিরিয়ান শিশুরা দাবী জানায় মাদায়া ও জাবাদানি শহর থেকে যেন অবরোধ তুলে নেয়া হয়।
মানবাধিকার কর্মীরা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে যেখানে অপুষ্টিতে ভোগা সিরিয় শিশুদের দেখা যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সিরিয়ার মাদায়া শহরে মানবিক সহায়তা সরবরাহে সম্মত হয়েছে দেশটির সরকার। অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকা মাদায়া শহরের পরিস্থিতি ভয়াবহ বলে জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো।
বিভিন্ন খবরে জানা যাচ্ছে সেখানকার বাসিন্দারা অভুক্ত অবস্থায় রয়েছেন, না খেতে পেয়ে মারা গেছেন অনেকে। দামেস্ক থেকে ২৫ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে এবং লেবানন সীমান্তের মাত্র ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাদায়া শহরটি বেশ কয়েক মাস ধরেই সরকারি বাহিনী এবং হিজবুল্লাহ’র নিয়ন্ত্রণে।
মাদায়ার একজন বাসিন্দা বিবিসিকে জানান, না খেতে পেরে দু’জন লোক বৃহস্পতিবার সেখানে মারা গেছে। আব্দেল ওয়াহাব আহমেদ নামের ওই বাসিন্দা আরও জানাচ্ছেন সরকারী বাহিনী ও হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ওই শহরটিতে অবরোধ আরোপের পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৬০ জন মানুষ মারা গেছে। “দু’শো দিন ধরে মাদায়া অবরুদ্ধ হয়ে আছে। আজ দু’জন মারা গেছে। এখানকার লোকজন এখন মাটি-ঘাস-গাছের পাতা খাচ্ছে কারণ খাবার আর কিছু নাই। শীতের কারণে পরিস্থিতিও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। ঘাস-পাতাও শুকিয়ে যাচ্ছে”।
লেবাননের বৈরুতে জাতিসংঘ সদরদপ্তরের সামনে গত ডিসেম্বর মাসে প্ল্যাকার্ড নিয়ে সিরিয়ান শিশুরা দাবী জানায় মাদায়া ও জাবাদানি শহর থেকে যেন অবরোধ তুলে নেয়া হয়।
যদিও সেখানকার কত মানুষ না খেতে পেয়ে মারা গেছে সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য জানা যাচ্ছেনা । তবে মেদসাঁ সঁ ফ্রঁতিয়ে বলছে ডিসেম্বর মাসে তাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা নিতে আসা অভুক্ত মানুষদের মধ্যে ২৩ জনই মারা গেছে।
জাতিসংঘ বলছে, সিরিয়ার সরকার যেহেতু মাদায়ায় মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে রাজী হয়েছে, সুতরাং কোন ঝামেলা না হলে সোমবারের মধ্যে সেখানে সাহায্য সামগ্রী নিয়ে ট্রাক পৌঁছাতে পারবে।
সেভ দা চিলড্রেন জানাচ্ছে, মাদায়ায় যদি জরুরী ভিত্তিতে খাবার, চিকিৎসা সামগ্রী, জ্বালানীসহ জরুরী সামগ্রী পৌঁছানো না যায় তাহলে আরও শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটবে সামনে।
সেখানকার স্থানীয় হাসপাতালের অবস্থা যে কতটা শোচনীয় মি: আহমেদের বর্ণনায় তা স্পষ্ট প্রকাশ পায়।
“হাসপাতালে এখন দেড়শোরো বেশি মানুষ অচেতন অবস্থায় আছে। অবরোধ আরোপের পর থেকে শহরটিতে জ্বালানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের সরবরাহ কমে গেছে। কোনও ওষুধা নাই এখন, কোন বেডও খালি নাই এমনকি অ্যাম্বুলেন্সও নাই। একদিনের জন্য যেন অবরোধ তুলে নেয়া হয় আমরা এটিই চাই”।

Comments (0)
Add Comment