পাঁচবিবিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ভ্যানচালকের মেয়ে ফাতেমা

পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) সংবাদদাতা: জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ভ্যানচালকের মেয়ে ফাতেমা এবার পাঁচবিবি এন,এম (নসির মন্ডল) সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। সে পৌর এলাকার দানেজপুর আদিবাসী পল্লীর দরিদ্র ভ্যানচালক আব্দুল জলিল ওরফে কাঙ্গালের মেয়ে। ৪ ভাই বোনের মধ্যে ফাতেমা বড়। থাকেন ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে। বেড়ার ফাঁক দিয়ে শীতের হিমেল হাওয়া ঘরে প্রবেশ করে। ভাল রেজাল্ট করলেও পয়সার অভাবে কাউকে মিষ্টি খাওয়াতে পারেননি। আর্থিক অবস্থা নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো। প্রাইভেট কিংবা কোচিং এ পড়ানোর মতো সামর্থ্য ছিলনা ফাতেমার বাবার। অদম্য মেধাবী ফাতেমা নিজ চেষ্টায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। ইতি পূর্বে পঞ্চম শ্রেনীতেও ফাতেমা জিপিএ-৫ পেয়েছিল। মাঝপথে পড়া লেখা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে ফাতেমা ভবিষ্যৎ কোন স্বপ্ন দেখেন না। তবে শিক্ষক হয়ে ছোট তিন ভাই বোনের পড়া লেখার দায়িত্ব নিতে চায় ফাতেমা। ফাতেমা আক্ষেপ করে বলেন, এখন যাত্রীরা চার্জার ভ্যানে চলাচল করেন। তার পিতার ভ্যানগাড়িটি পুরাতন ও প্যাডেল ভিত্তিক হওয়ায় যাত্রীরা উঠতে চায় না। সারাদিন হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোন মতে সংসার চালানোই কষ্টকর।
ফাতেমার পিতা আব্দুল জলিল ওরফে কাঙ্গাল বলেন, মেয়েকে প্রাইভেট কিম্বা কোচিং দিতে পারিনি। বিজ্ঞান বিভাগে পড়া লেখার খরচ বেশি। তাই মানবিক বিভাগে দিয়েছি। কোতোয়ালী বাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাফিজার স্যার বিনা পয়সায় মেয়েটিকে প্রাইভেট পরিয়েছেন বলে তিনি তার কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি সমাজের বৃত্তবানদের কাছে তার মেয়ের পড়া লেখার জন্য সহযোগীতা চেয়েছেন। শত দারিদ্র্যতার মাঝে শেষ পর্যন্ত তার মেয়ের লেখা পড়ার খরচ যোগাতে পারবেন কি-না এই ভেবে চিন্তায় আছেন ভ্যানচালক আব্দুল জলিল।

Comments (0)
Add Comment