Connecting You with the Truth

নড়াইলে পরকীয়ার জেরে গৃহবধূকে আগুনে ঝলসে দিল স্বামী

1444733459উজ্জ্বল রায়, নড়াইল: নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামে পরকীয়ার জের ধরে ও যৌতুকের দাবিতে গতকাল এক গৃহবধূকে তাঁর স্বামী মারধরের একপর্যায়ে আগুন দিয়ে ঝলসে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগুনে ঝলসে দেওয়ায় পাষন্ড স্বামীর মূল উদ্দেশ্য ছিল না, তাকে হত্যা করাই ছিল মূল পরিকল্পনা। জানা যায়, তাঁকে গুরুতর অবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলেন, তাঁর শরীরের ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে। ওই গৃহবধূর নাম শাবানা বেগম (২৪)। তাঁর স্বামীর নাম আনজারুল মোল্যা। চিকিৎসাধীন শাবানা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী দিন নেই রাত নেই মোবাইলে একটি মেয়ের সঙ্গে শুধু কথা বলেন। আর প্রায়ই আমার বাবার বাড়ি থেকে পাঁচ হাজার, দশ হাজার টাকা এনে দিতে বলেন। গতকাল বিকেল চারটার দিকে বাড়ির কাজ করার সময় দেখি, স্বামী মোবাইলে ওই মেয়ের সঙ্গে কথা বলছেন। মোবাইলটা কেড়ে নিলে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি আমাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। এতে আমার বাঁ হাত ভেঙে যায়। বারান্দায় বসে কাঁদতে থাকলে পেছন থেকে তিনি আমার পরনের কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেন। আমি নেভানোর চেষ্টা করে একপর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ি। জ্ঞান ফিরলে দেখি, আমি হাসপাতালে।’ প্রতিবেশীরা বলেন, মেয়েটা খুবই ধৈর্যশীল। ওর স্বামী অন্য এক মেয়ের সঙ্গে মুঠোফোনে অনেক কথা বলেন। দুজনের মধ্যে এ নিয়ে প্রায়ই কথা-কাটাকাটি হতো। গতকাল কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মেয়েটিকে লাঠি দিয়ে মারেন তিনি। পরে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন। পানি দিয়ে আগুন নেভানোর আগেই তাঁর শরীর পুড়ে যায়। আনজারুলের বাবা আক্তার মোল্যা বলেন, ‘ছেলে-বউয়ের মধ্যে কী নিয়ে ঝগড়া হয়েছে জানি না। বাড়ি এসে শুনি, বউমা হাসপাতালে।’ আনজারুলের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। সদর হাসপাতালের চিকিৎসক সজল বকসি বলেন, গৃহবধূর শরীরের ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুভাষ বিশ্বাস বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। তারপরও খোঁজ নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Comments
Loading...