রাজধানীতে আধা কিলোমিটার দূরত্বে ঝরল দুই স্কুলছাত্রীর প্রাণ
রাজধানীতে আধা কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ঝরে পড়ল দুই স্কুলছাত্রীর প্রাণ। এর মধ্যে শনিবার সকালে মৎস্য ভবনের সামনে বাসের ধাক্কায় নিহত হন নবম শ্রেণির ছাত্রী সাবিহা আক্তার সোনালী । আর বিকেলে শাহবাগ মোড়ে বাসের নিচে চাপা পড়েন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী খাদিজা সুলতানা মিতু।
নিহত স্কুলছাত্রী সোনালী সেগুনবাগিচার বেগম রহিমা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। আর নিহত স্কুলছাত্রী মিতুর বাড়ি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মনোহরগঞ্জে। মিতু (১২) কুমিল্লা থেকে ঢাকায় তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন বলে স্বজনরা জানায়।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শাহবাগ মোড়ে রাস্তা পার হওয়ার সময় ৮ নম্বর রুটের (গাবতলী-যাত্রাবাড়ী) রুটের একটি বাসের নিচে চাপা পড়ে মিতু। সঙ্গে সঙ্গে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা দেখে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে থাকা মিতুর স্বজনরা জানান, গত ৯ জানুয়ারি ঢাকায় এসেছিল মিতু। সে কুমিল্লার লক্ষ্মণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ত। ঢাকায় তার বোনের বাসা শ্যামপুরে। এর আগে শাহবাগ মোড় থেকে আধা কিলোমিটার দূরে মৎস্য ভবনের কাছে বাসের ধাক্কায় সোনালীর (১৪) মৃত্যু হয়। এরপর তার সহপাঠী ও স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায়।
সোনালী সেগুন বাগিচার রহিমা খাতুন আদর্শ বিদ্যালয় থেকে এবার জেএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। তার বাবার নাম জাকির হোসেন। তাদের বাড়ি পিরোজপুর জেলার নাজিরপুরে। শাহবাগ থানার উপ পরিদর্শক মো. নীরু মিয়া বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সোনালী গণপূর্ত ভবনের (এখন সুপ্রিম কোর্টের ভবন) সামনে থেকে রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি বাসের ধাক্কায় তার মৃত্যু হয়।’
পুলিশ বাসটি আটক করলেও এর চালক পালিয়ে যান। সোনালীর মৃত্যুর খবর শোনার পর তার স্কুলের শিক্ষার্থীরা এবং স্থানীয়রা মৎস্য ভবন মোড়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীরা দুর্ঘটনার জন্য বাসচালকের বেপরোয়া চালনাকে দায়ী করে বলছিলেন, সোনালীর মৃত্যু রাজধানীর অনিরাপদ সড়কের চিত্রই আবার তুলে ধরেছে।
গত সপ্তাহে শাহবাগে বাসের ধাক্কায় বারডেম হাসপাতালের এক কর্মী নিহত হয়েছিলেন। তার কয়েকদিন আগে যাত্রাবাড়ীতে বাসের ধাক্কায় নিহত হন পথচারী এক নারী।
বাংলাদেশে গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় সাড়ে ৮ হাজার জন নিহত হন বলে সম্প্রতি যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামে একটি সংগঠন পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। তবে এই তথ্যকে ভুয়া বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের আরেকটি পরিসংখ্যানে বলা হয়, ২০১৫ সালে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি মানুষ দুর্ঘটনায় নিহত হন। এই সংখ্যা ৩৫৯। এর মধ্যে রাজধানীতেই নিহত হন ২২৭ জন।