উত্তর কোরিয়া ‘ইতিহাসের সেরা’ সামরিক মহড়া চালিয়েছে: দক্ষিণ কোরিয়া
উত্তর কোরিয়া দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া চালিয়েছে বলে দাবি করেছে প্রতিবেশী দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে আরো জানা গেছে, মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় ওনসান অঞ্চলের চারপাশে একটি ‘বড় আকারের আর্টিলারি ড্রিল’ গঠন করে উত্তর কোরিয়া।
ধারণা করা হচ্ছে, পার্শ্ববর্তী পীত সাগরে সম্ভাব্য মার্কিন-দক্ষিণ কোরীয় নৌবাহিনীর যৌথ সামরিক মহড়ার প্রাক্কালে এই বিপুল সামরিক শক্তি প্রদর্শন করলো উত্তর কোরিয়া। যদিও এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিন ইউএসএস মিশিগান দক্ষিণ কোরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলে পৌঁছায়। সাবমেরিনটি এ অঞ্চলে আগত মার্কিন বিমানবাহী রণতরী কার্ল ভিনসনের সঙ্গে যুক্ত হতে প্রস্তুত রয়েছে বলে মার্কিন নৌবাহিনী জানিয়েছে।
অপর এক বিবৃতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতির কার্যালয় জানিয়েছে, চলমান উত্তেজক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উত্তর কোরিয়ায় আজ (মঙ্গলবার) পালিত হচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনীর ৮৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এর আগে এমন অনুষ্ঠানের সময়ে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এবারও এমন পরীক্ষা চালানো হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মার্কিন-উত্তর কেরিয়ার অতি আক্রমণাত্মক ও উস্কানিমূলক বাক্যবিনিময়ের কারণে এ অঞ্চলের উত্তেজনা চরম অবস্থায় পৌঁছেছে।
উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত মত প্রকাশের জন্য বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে পুরো মার্কিন সিনেটকে হোয়াইট হাউসে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়া পরস্পর উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ভিনসন স্ট্রাইক গ্রুপকে কোরিয়া উপদ্বীপে পাঠানোর ঘোষণার পর সেখানে এখন কার্যত যুদ্ধাবস্থা জারি রয়েছে।
পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও ইউএসএস মিশিগানে ১৫৪টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র, ৬০ জন বিশেষ প্রশিক্ষিত সেনা এবং কয়েকটি মিনি-সাবমেরিন রয়েছে বলে দক্ষিণ কোরিয়ান এক সংবাদপত্র জানিয়েছে। মার্কিন শক্তি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে কার্ল ভিনসনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইউএসএস মিশিগান কোরিয়া উপদ্বীপে সামরিক মহড়া চালাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন নৌবাহিনী জানিয়েছে, রণতরী কার্ল ভিনসন নির্দেশ অনুসারে কোরিয়ার দিকে যাত্রা করেছে।
পিয়ংইয়ং কোরিয়া উপদ্বীপে যে কোনও সামরিক মহড়াকে আগ্রাসন বলে মনে করে। প্রতিক্রিয়ায় তারা এর আগে হুমকি দিয়েছে, ‘মার্কিন আগ্রাসন রুখতে প্রয়োজনে রণতরী ডুবিয়ে দেওয়া হবে।’ এছাড়া দেশটি তাদের পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্র পুঙ্গি-রিতে কর্মকাণ্ড জোরদার করেছে এবং তারা যেকোনো সময় পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর জন্যে প্রস্তুত। সিএনএন।