ঐক্যবদ্ধ গড়ে তুলতে জাতীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি ফখরুলের আহ্বান
বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার চেয়ারটি ফাঁকা রেখে গতকাল রাজনীতিবিদদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি। মঞ্চে খালেদা জিয়ার শূন্য চেয়ারের এক পাশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিকল্পধারা বাংলাদেশ এর সভাপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ ও ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা বসেন।
অতিথি সারিতে বসে ইফতার করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বীরপ্রতীক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির আ স ম আবদুর রব, তার স্ত্রী তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বিকল্পধারা বাংলাদেশ এর সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক। মঞ্চে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মাহবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বসা ছিলেন।
রাজনীতিবিদদের ইফতারে স্বাগত জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রতিবছর আমরা এই ইফতারের আয়োজন করি। এই ইফতারের কেন্দ্র বিন্দুতে থাকেন আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আজকে তিনি আমাদের মাঝে উপস্থিত নেই। তিনি এই সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে আজকে তাকে ইফতার করতে হচ্ছে। আমরা সবাই সেজন্য আজকে ভরাক্রান্ত।
তিনি বলেন, দেশের এই দুঃসময়, গণতন্ত্রের চরম সংকটে আমরা সবাই প্রত্যাশা করি যে, আমাদের জাতীয় নেতৃবৃন্দ মূল্যবান অবদান রাখবেন এবং সংকট উত্তরণে তারা নেতৃত্ব দেবেন। আমরা মনে করি এই সংকট উত্তরণে জাতীয় ঐক্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবার জন্য আমাদের জাতীয় নেতৃবৃন্দ যারা উপস্থিত হয়েছেন তাদের সকলের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান থাকবে দেশের প্রয়োজনে আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করি।
দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বিকল্পধারা বাংলাদেশ এর সভাপতি বি চৌধুরী বলেন, আজকে বিএনপির নেতারা বেশি না হলেও কর্মীদের ভয়ে বুক কাঁপে ধুর ধুর করে। কাঁপবে না কেনো? তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। কি হবে যদি আবার সরকারি দল ক্ষমতায় আসে- এবারে আমাদের কি হবে? এটা স্বাভাবিক শঙ্কা। অভিজ্ঞতায় বলে খুব সুবিধা হবে না। একইভাবে সরকারের কিছু কিছু রাজনৈতিক কর্মী আমার কাছে আসছেন তাদেরও বুক কাঁপে। যদি বিএনপি আসে তাহলে তাদের কি হবে? এটা কী খুব ভালো কথা, এটা কী রাজনীতির জন্য শুভ, এটা কী দেশের ভবিষ্যতের জন্য শুভ? এটা কী ইঙ্গিত নয় যে, আমরা একটা পর্যায় যেতে পারি দেশ যেখানে মানুষ মানুষকে হত্যা করে, নিগৃহীত করবে, জেলে দেবে, আগুন জ্বালিয়ে দেবে। কিন্তু’ থামাবে কে? আমি চিন্তার খোরাক দিয়ে গেলাম।
তিনি বলেন, এমন একটা শক্তি দরকার যে ওদিকেও কন্ট্রোল করতে পারে, এদিকেও কন্ট্রোল করতে পারে। তারা যদি উঠে আসতে পারে। বলে দেয়- তোমরা যদি একটা মানুষের গায়ে হাত দাও তাহলে সমর্থন উইথ ড্র করবো, গোল্লায় যাও, বিরোধী দলে যাও। ওটাও বলবে, ওটাও বলবে। একমাত্র তাহলেই দেশ রক্ষা পেতে পারে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি আমাদের দেশে যেন সেরকম দুর্যোগ না আসে। আমরা যেন মানুষকে মানুষ হিসেবে ভালো ভাবতে শিখি।
বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে ছিলেন- আবদুল্লাহ আল নোমান, কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, বরকতউল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, আবদুল মান্নান, আমিনুল হক, ড. এনামুল হক চৌধুরী,আমানউল্লাহ আমান, অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স,নাজিম উদ্দিন আলম প্রমুখ। ইফতারের আগে কারাবন্দি অসুস্থ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আরোগ্য লাভসহ দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করা হয়।