Connecting You with the Truth

গুলশান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী সুলাইমান ভারতে!

Terrorist attacks in Gulshan 1আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাজধানীর সুরক্ষিত কূটনৈতিক এলাকা গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ভারতে লুকিয়ে আছে! বাংলাদেশের তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তারা মো. সুলাইমান নামের ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পেরেছেন। গুলশান হামলার বিষয়টি চূড়ান্ত করে সাত মাস আগে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চলে যান। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারিভাবে বাংলাদেশের ‘নিখোঁজ যুবকদের’ নথি তৈরি করা হচ্ছে। এই নথি ভারতকে দিতেও কোনও বাধা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী। একইসঙ্গে তিনি ভারতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে অংশ নিতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।
মো. সুলাইমান নামের ওই জঙ্গি জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) একজন শীর্ষ নেতা বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোথাও আত্মগোপনে রয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশও তাকে খুঁজছে।
১০ দিন আগে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলা থেকে আইএসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আবু আল-মুসা আল বাঙালি ওরফে মুসাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে মো. সুলাইমানের নাম জানা যায়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, দুই বছর ধরে আবু আল-মুসার হয়ে কাজ করেছেন সুলাইমান। পশ্চিমবঙ্গে উধাও হওয়ার আগে সীমান্তবর্তী জেলা মালদায় তাদের সাক্ষাৎ হয়। এর আগে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে দু’জনের মধ্যে ছয়বার সাক্ষাৎ হয়।
এদিকে গুলশান হামলার পর বাংলাদেশের কারাগারে আটক থাকা শীর্ষস্থানীয় জঙ্গি নেতাদের পৃথক সেলে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
গুলশান হামলার তদন্তকারীরা বলছেন, এ হামলা ছিল নিষিদ্ধ ঘোষিত তিনটি জঙ্গি সংগঠনের সম্মিলিত হামলা। এ সংগঠনগুলো হচ্ছে জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), হিযবুত তাহরীর ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। হামলার জন্য সাত মাস ধরে প্রস্তুতি নেয় জঙ্গিরা।
১ জুলাই ২০১৬ শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশান লেকপাড়ের অভিজাত হলি আর্টিজান বেকারির ফটকে হঠাৎ গুলির শব্দ শোনা যায়। তলোয়ার-আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে সাত জঙ্গি। জঙ্গিদের অতর্কিত বোমা হামলায় শুরুতেই নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। রাতভর জিম্মিদের উদ্ধারের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। সকালে যৌথ বাহিনীর কমান্ডো অভিযানে ছয় জঙ্গির মৃত্যুর খবর জানানো হয়। কিন্তু এরপরের দৃশ্য ভয়ংকর। একে একে ২০ জিম্মির মৃতদেহের সন্ধান মেলে। এর মধ্যে ১৭ জনই বিদেশি। পরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত পিস্তল, পয়েন্ট ২২ রাইফেল, হাতে তৈরি গ্রেনেড (আইইডি), ওয়াকিটকি সেট ও ধারালো দেশীয় অস্ত্র।
এর আগে শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে আইএসের কথিত বার্তা সংস্থা আমাক নিউজের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ এক টুইট বার্তায় জানায়, আইএস দাবি করেছে, তারা ঢাকার রেস্তোরাঁয় আক্রমণ করে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে রেখেছে। এরপর আমাক নিউজ ওই রেস্তোরাঁর ভেতর থেকে রক্তাক্ত আট-নয়জনের ছবিও প্রকাশ করে এবং আইএস দাবি করে, তাদের এই হামলায় ২৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে। সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।

Comments
Loading...