চট্টগ্রামে সাংবাদিক হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে তীব্র নিন্দা
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ, বহিস্কার ও ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি জানিয়ে তিনদিনের সময়সীমা বেধে দিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক সমাজ। এ ঘটনায় আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির (রোববার) মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে ২২ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) সমাবেশ করে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়।পাশাপাশি জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ছাত্রলীগ, চমেক এবং চিকিৎসকদের কোন সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার ঘোষণাও দেন সিইউজে সভাপতি।এসময় হামলার জন্য দায়ী চমেক ছাত্রলীগের নেতা নামধারী ‘সন্ত্রাসীদের’ নিয়ন্ত্রণ করতে ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের প্রতি দাবি জানান সাংবাদিক নেতারা।সমাবেশে কর্মসূচি ঘোষণা করে এজাজ ইউসুফী বলেন, যার অধীনে মেডিকেলে ছাত্র সংগঠন পরিচালিত হয় সেই নগরপিতা ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের কাছে দাবি জানাচ্ছি গুন্ডাদের গ্রেফতার ও কলেজ থেকে বহিস্কার করার জন্য। পাঁচলাইশ থানার ওসিকে বলছি ঘটনায় করা সাধারণ ডায়েরি মামলা হিসেবে নিন। না হলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে যাব। প্রয়োজনে আদালতে মামলা করব।তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের হাতে বিএমএ নেতারাও জিম্মি। তারা গুন্ডাদের ভয় করে। সংবাদপত্রে বিএম নেতা ও চমেক অধ্যক্ষের বক্তব্য দেখেছি। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা না থাকলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। কলেজ, পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতাদের তিনদিনের সময় দিচ্ছি। সংগঠন থেকে বহিস্কার, কলেজের ছাত্রত্ব বাতিল এবং মামলা নিতে হবে।প্রেসক্লাব সভাপতি কলিম সরওয়ার বলেন, চমেক ছাত্রলীগের কোনো অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা যাবে না। তাদের কোনো সংবাদ প্রকাশ করা হবে না। যারা হামলাকারীদের প্রশ্রয় দেয় তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে পিছ পা হব না। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দেব। থানা মামলা না নিলে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে আট ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করব।একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, ছাত্রলীগের নামে হামলা-অত্যাচার হচ্ছে। এতে গণমাধ্যম ও স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়ছে। সন্ত্রাসীরা যেন রাজনীতির নামে পার পেয়ে না যায়।সিইউজে সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস বলেন, ছাত্রলীগের গুন্ডাবাহিনী ন্যাক্কারজনক হামলা করেছে। আওয়ামী লীগ নেতারা আপনারা গুন্ডা সামলান। তিনদিনের মধ্যে গুন্ডাদের বহিস্কার করুন।প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, মেয়রের (আ জ ম নাছির) নাম ব্যবহার করে একের পর এক ঘটনা ঘটছে। তিনি নিশ্চুপ। তার নিরবতা প্রমাণ করে, ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের (সন্ত্রাসীদের) লালন পালন করছেন। পুলিশ প্রশাসন কি উপরের চাপ সহ্য করতে পারছেন না? আপনারা অবস্থান পরিস্কার করুন।প্রথম আলোর সহকারী বার্তা সম্পাদক ওমর কায়সার বলেন, মেয়র অনেক ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু আপনার নাম ব্যবহার করে যে অপকর্ম হচ্ছে তা বন্ধ করুন। সিটি মেয়রকে উদ্দেশ্য করে সিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজিমুদ্দিন শ্যামল বলেন, আপনার ছাত্রসংগঠন গুন্ডারা দখল করে রেখেছে। তাদের সামলান।সিইউজের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের সহ-সভাপতি শহীদ উল আলম, সিইউজে সাবেক সভাপতি মোশতাক আহমদ, সিইউজে সহ-সভাপতি রতন কান্তি দেবাশীষ, প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, সিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, নুরুল আমিন, বিএফইউজে যুগ্ম মহাসচবি তপন চক্রবর্তী, সিইউজের অর্থ সম্পাদক আবছার মাহফুজ, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শুভ, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম সভাপতি মঞ্জুরুল আলম, চট্টগ্রাম ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, সিইউজের নির্বাহী সদস্য ফারুক তাহের, প্রতিনিধি ইউনিট প্রধান সমীর বড়ুয়া, এছাড়া আরও উপস্থ
িত ছিলেন, ফটো সাংবাদিক মিয়া আলতাফ শেখ মুরশেদ আলম,বাচ্চু বড়–য়া, সাইদুল আজাদ, মোঃ রাশেদ,অনুপম বড়–য়া, হেলাল সিকদার,রনি দে, রাজিব রায়হান , প্রদীপশীল, চট্টগ্রাম টিভি ক্যামেরা জার্নালিষ্ট সাংবাদিকরা সহ আরও অনেকে।