চুনারুঘাট থানার ওসি নির্মলেন্দুর প্রচেষ্টায় ঘাতক মা-বাবার নির্মম নির্যাতনের শিকার শিশু রিপা এখন সুস্থ
চুনারুঘাট(হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: নিজ পিতা-মাতার উপর্যপুরি ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত ৪ বছরের শিশু রিপা আক্তার এখন শঙ্কামুক্ত। দীর্ঘ ২১ দিন যাবৎ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপতালের সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। কর্তব্যরত চিকিসৎকের সূত্রে জানাযায় শিশুটির হাত-পা সহ গায়ের বিভিন্ন অংশের শিরা কেটে গেছে। সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে প্রায় ১ মাস সময় লাগতে পারে। চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ নির্মলেন্দু চক্রবর্তীর একান্ত চেষ্টায় অবুঝ অসহায় শিশুটি মৃত্যুর মুখ থেকে নতুন জীবন পেয়েছে। শিশু রিপার আহতের পর থেকেই আত্মীয় স্বজন না থাকায় চিকিৎসা দায়িত্ব নেন চুনারুঘাট থাানা পুলিশ। মা-বাবা থেকে আজ শিশুটি অসহায়। পুলিশের সহায়তায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাকে। আত্মীয় স্বজন বলতে তেমন নেই। একমাত্র নানা বাবুল মিয়াই এখন শিশুটি দেখাশোনা করছেন। ঔষধ কেনার জন্য চুনারুঘাট থানার ওসি নির্মলেন্দু চক্রবর্তী গতকাল রোববার দুপুরে শিশুর নানার আসামাপাড়া বাজারের বাসিন্দা বাবুল মিয়ার নিকট চিকিৎসাবাবত প্রায় ৫হাজার ৬শ’ ৯১ টাকা তার হাতে তুলে দেন। এছাড়াও এর পূর্বে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপতালে এককালীন প্রায় ২০ হজার দেয়া হয়েছে। এসম উপস্থিত ছিলেন চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠিনক সম্পাদক সজল দাস, চুনারুঘাট প্রেসক্লাব সেক্রেটারী মোঃ জামাল হোসেন লিটন ও সাংবাদিক খন্দকার আলাউদ্দিন।
চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ নির্মলেন্দু চক্রবর্তী বলেন, গত ২২ আগষ্ট প্রতিপক্ষকে ফাঁসানো হীন উদ্দেশ্যে নিজ বাবা-মা’র হাতে গুরুতর আহত হয় ৪ বছরের শিশু রিপা আক্তার। ঘটনার পর থেকেই ঘাতক পিতা পলাতক এবং মাতা পুলিশ হেফাজতে থাকায় ওই শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্বভার নেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) জয়দেব কুমার ভদ্র। পরে পুলিশ সুপারের আদেশক্রমে শিশু রিপার দায়িত্ব আমি (ওসি) নেই। বর্তমানে শিশু রিপা সুস্থ হয়ে উঠেছে। কিন্ত পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও সময় লাগবে। রিপার চিকিৎসার খরচ আমি ও আমার পুলিশসহ বিভিন্ন বিত্তবানদের নিকট হতে অর্থের ব্যবস্থা করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। শিশুটির চিকিৎসার জন্য আরোও অনেক টাকার প্রয়োজন রয়েছে। বর্তমানে ঘাতক বাবা লিটন পলাতক এবং মা মিলন বেগম জেল হাজতে রয়েছে।
উলেখ্য, গত ২২ আগস্ট গভীর রাতে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের উসমানপুর গ্রামের বাবুল মিয়া একই গ্রামের প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের সাত মাসের শিশুকে হত্যা করে ঘাতক মা-বাবা। পরে পাশে ঘুমন্ত থাকা অবস্থায় তাদের বড় মেয়ে রিপা আক্তার জেগে উঠায় হত্যার উদ্দেশ্যে তাকেও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। শিশুটি মারা গেছে নিশ্চত ভেবে ঘরে রেখে ঘাতক মা-বাবা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজল সকালে পুলিশকে খবর দিলে চুনারুঘাট থানার এসআই আতাউর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে ৭ মাসের শিশুটিকে মৃত ও রিপাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপতালে প্রেরণ করা হয়। এর পর থেকেই পুলিশ চিকিৎসার সকল খরচ চালিয়ে যাচ্ছে।