ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাংচুর; কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক
ঝিনাইদহ সংবাদদাতা: ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডে সোমবার দুপুরে ভাংচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ আহত হয়েছেন। দুর্বৃত্তরা অফিসের কম্পিউটার ও টেবিলের গ্লাস ভাংচুরসহ নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস তছতন করে। এ সময় অফিসে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। কর্মচারীরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে এদিকে ওদিক ছুটোছুটি করতে থাকে। ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ জানান, সোমবার দুপুরে ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার ২৯ গ্রুপের কাজের ইজিপি লটারি চলছিল। লটারিতে ১৩৩ জন ঠিকাদার অংশ গ্রহন করেন। তিনি আরো জানান, ১৮টি গ্রুপের লটারি ইজিপি পদ্ধতিতে সম্পন্ন হওয়ার পর সরকার সমর্থক কিছু ঠিকাদার তার রুমে প্রবেশ করে স্থানীয় (এনালগ) পদ্ধতিতে লটারি করার দাবী জানায়। কিন্তু হেড অফিসের নির্দেশের বাইরে যাওয়ার কোন নিয়ন নেই নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছ থেকে এমন জবাব পেয়ে তারা ক্ষিপ্তি হয়ে টেন্ডার কাজে নিয়োজিত কম্পিউটারটি ভেঙ্গে ফেলে। এ সময় তারা নির্বাহী প্রকৌশলীকে গালিগালাজ করতে করতে তার টেবিলের সরু গ্লাসটিও ভাংচুর করে বলে নির্বাহী প্রকৌশলী জানান। ভাঙ্গা কাঁচে টুকরো নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফের পেটে বিদ্ধ হয়ে তিনি রক্তাক্ত জখম হন। দুর্বৃত্তদের তান্ডবে অফিসের কর্মচারীরা আতংকিত হয়ে পড়েন। ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারীরা অভিযোগ করেন, এখানে আর চাকরী করার কোন পরিবেশ নেই। সরকারী দলের নাম ভাঙ্গিয়ে অহরহ কর্মকর্তা কর্মচারীদের পেটানো হচ্ছে। কোন বিচার নেই, নিরাপত্ত নেই। এর আগে টিকাদারকে বিল না দেওয়ায় আশলাফুল সিদ্দিকী নামে এক শৈলকুপার এক শাখা কর্মকর্তাকে পেটানো হয়েছিল। তিনি কোন বিচার পায়নি। তিনি ক্ষোভে ঝিনাইদহ ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাকে মারধর করার পর তার বাড়িতেও চুরি করা হয়েছে। এদিকে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভাংচুরের খবর পেয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমানের নেতেৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ব্যপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ইজিপি টেন্ডারের প্রতিবাদ জানিয়ে কতিপয় ঠিকাদার নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস কক্ষ তছনছ করেছে। অফিসের কম্পিউটার ও টেবিলের মোটা গ্লাস ভেঙ্গেছে। তিনি আরো জানান, টেন্ডারের সময় পুলিশকে জানানো হয়নি। জানালে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। তিনি জানান, অভিযোগ পেলে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উল্লেখ্য, গত ৬ বছরে সরকারীদলের ছত্রছায়ায় ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডে একাধিক নির্বাহী প্রকৌশলী ও শাখা কর্মকর্তা লাঞ্চিত করা হলেও তারা কোন প্রতিকার পাননি।