ঠাকুরগাঁওয়ে চলছে মোটরসাইকেল চুরি’র মহোৎসব
আব্দুল আউয়াল, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ে মোটর সাইকেল চুরির সিন্ডিকেটের সদস্যরা আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই শহর ও বাসাবাড়ি থেকে একের পর এক মোটর সাইকেল চুরি হলেও স্থানীয় প্রশাসনের এ ব্যাপারে কোন মাথা ব্যথা নেই। এছাড়াও মোটরসাইকেল চুরির সিন্ডিকেটের মাসোহারা পাচ্ছে স্থানীয় থানা পুলিশের উদ্বর্তন কর্মকর্ত্ াতাই চোরের সামনে ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা ঘুরা ফেরা করলেও কখনো তাদের আটক করছে না পুলিশ। তাই এ নিয়ে জেলার মানুষ মোটরসাইকেল নিয়ে আতংকে দিন পার করছে। আর মোটরসাইকেল চুরি ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ অনেক সময় চুরির মামলা নিতে চায় না। তারা বলেন, জিডি করে যান, পুলিশ খোঁজ খবর পেলে আপনাদের জানাবে। ভুক্তভোগী ও সাধারন মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মোটরসাইকেল চোর আটকের বিষয়ে পুলিশ আন্তরিক নয়। যার কারনে ঠাকুরগাঁওয়ে ২০১৫ সালে প্রায় দেড় শতাধিক মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। কিন্তু দু’ একটি ছাড়া বাকি গুলো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এছাড়া অনেক মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা থানা পর্যন্ত পৌছায় না। ঠাকুরগাঁও কালিবাড়ী বাসিন্দা মিনহাজ দ্দৌলা জানান, রাতে আমার বাড়ির তালা ভেঙ্গে ১০০ সিসির একটি ডিসকভার মোটরসাইকেল চোর চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারন ডায়েরি হয়েছে। কিন্তু পুলিশের কোন আন্তরিকতা পাইনি। এছাড়া গত বছরে ১০ নভেম্বর শহরের কালিবাড়ী বাজারের সামনে থেকে শহরের টিকাপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুমনের একটি কালো রংঙের পালসার-১৩৫ মোটর সাইকেল চুরি হয়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ গাড়ী উদ্ধার করতে পারে নাই। ঠাকুরগাঁও এলাকার বাসিন্দা ও সকলের পরিচিত ওহিদুল ইসলাম জানান, তার একটি মটর সাইকেল বসির পাড়া মসজিদের সামনে থেকে চুরি হয়। পরে আমি আরও একটি মোটরসাইকেল কিনি। সেটাও ৪দিন আগে বাসার গ্রিল কেটে চুরি হয়। অভিযোগ করার পরেও পুলিশ এখন পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারে নাই। গত বছরের ১৫ডিসেম্বর রাতে ঠাকুরগাঁও দৈনিক লোকায়ন সম্পাদকের মোটর সাইকেল চুরি হয়। তাৎক্ষনিক পুলিশকে অভিযোগ করা হলেও পুলিশের আন্তরিকতার অভাবে তা উদ্ধার করা হয়নি। দৈনিক লোকায়নের সম্পাদক সাবেক উল্লাহ জানান, পুলিশের কাছে অসম্ভব বলতে কিছুই নেই। ইচ্ছে করলেই পুলিশ যে কোন সময় যে কোন স্থান থেকে চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করতে পারবে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক মোটর সাইকেল চুরি সিন্ডিকেট দলের সদস্য জানান, আমাদের সিন্ডিকেট পুলিশ প্রতিমাসে মোটা অংকের মাসোহারা দেয়। তাই সহজে কোন ্থানা থেকে মোটর সাইকেল চুরি করা সম্ভব হয়। পুলিশ ইচ্ছে করলেই মোটরসাইকেল চুরি বন্ধ করতে পারে। তা ছাড়া কতিপয় কিছু আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এই সিন্ডিকেটের সাথে পরোক্ষ ভাবে জড়িত রয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মোটর সাইকেল চুরি রোধে ব্যার্থ হওয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ উদ্বিগ্ন ও শস্কার মধ্যে রয়েছে। ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, প্রায় সময় মোটরসাইকেল চোরদের আটক করা হয়। পরে আবার জামিনে একই পেশায় যোগ দেয় তারা। চুরি রোধে পুলিশের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই। ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ সুপার ফারহাদ আহম্মেদ জানান, পুলিশ যেকোন অপরাধ দমনে সোচ্ছার। পুলিশের লোকবল খুবই কম। তাই স্বল্প সংখ্যক লোকবল দিয়ে সবার মোটরসাইকেল ও নিরাপত্তা দেওয়ায় ইচ্ছে থাকা সত্বে সম্ভব হয়ে উঠে না।তবুও পুলিশ আন্তরিক ভাবে মোটরসাইকেল চুরি সহ সকল অপরাধ দমনে তৎপর। এবিষয়ে ঠাকুরগাঁও রোড প্রেস ক্লাব সভাপতি সৈয়দ আবদুল করিম জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে মোটরসাইকেল চুরি’র মহোৎসব চলছে, দিন – দিন’ প্রতিদিন রাস্তায় মোটরসাইকেল’ও বাড়ছে।