ঝিনাইদহে অস্ত্র-গুলিসহ আটক ৩
মনিরুজ্জামান সুমন, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর শহরের আদর্শপাড়ার একটি বাড়ি থেকে দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের স্বর্ণ, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান সিন্ডিকেটের গডফাদার রেজাউল ইসলাম পাঠান (৩২) ওরফে রেজাউল দালালকে অস্ত্র ও মাদকসহ ঝিনাইদহ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৬ আটক করেছে।
এ সময় তার দুই সহযোগী মিলন (৩৮) ও নান্টু মলিক (৩৪) কে আটক করা হয়। রেজাউল পাঠান কোটচাঁদপুর পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও আদর্শপাড়ার মৃত মোমিন পাঠানের ছেলে। আটক মিলন হোসেন কালীগঞ্জ উপজেলার বাকুলিয়া গ্রামের মোশাররফ হোসেনের ছেলে ও নান্টু মলিক চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার কন্দবপুর গ্রামের নিয়ামত মলিকের ছেলে বলে র্যাব জানান।
আটককৃতদের কাছ থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, ৪০ রাউন্ড গুলি, ফেনসিডিল, চাইনিজ কুড়াল, হাসুয়া, ইয়ারগানের বাট, ইয়াবা, লক্ষাধীক নগদ টাকা ও পুলিশের পোশাকসহ বিভিন্ন রকমের অবৈধ জিনিস উদ্ধার করে র্যাব। সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঝিনাইদহ র্যাব কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
ঝিনাইদহ র্যাব-৬ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মনির আহম্মেদ সাংবাদিকদের জানান, রোববার (২৬ জুন) দিনগত রাত ১টার দিকে ওই তিন মাদক ব্যবসায়ী অস্ত্র ও গুলি নিয়ে কোটচাঁদপুর শহরের আদর্শপাড়ায় অবস্থান করছিলেন। এমন খবর পেয়ে র্যাবের একটি টহল দল সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে এসব অস্ত্র, গুলি ও মাদক উদ্ধার করা হয়। র্যাব আরো জানায়, রেজাউল পাঠান দক্ষিনাঞ্চল পশ্চিমাঞ্চলের সোনা, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান সিন্ডিকেটের গডফাদার হিসেবে পরিচিতি। ধীর্ঘদিন ধরে তিনি এ কাজের সাথে জড়িত। তিনি পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে নিজেই পুলিশের পোশাক পরে অভিযান পরিচালনা করতো বলে র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
এদিকে এলাকাবাসির অভিযোগ, কোটচাঁদপুরের এক জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তা এই রেজউল দালালকে সহায়তা করে আসছিলো। ফলে বছরের পর বছর রেজাউল দালাল মুকুটহীন ভাবে রমরমা পরিবেশে চোরাচালান ব্যবসা করে আসলেও তিনি ছিলেন আইনের উর্ধ্বে। অল্প দিনে তার কোটিপতি হওয়ার পেছনে রয়েছে চমকে দেওয়ার মতো সব চাঞ্চল্যকর তথ্য। আর এ সব করতেন তিনি র্যাব ও পুলিশেরে সোর্স পরিচয় দিয়ে। ফলে ভয়ে এলাকার কেও মুখ খুলতে সাহস পেতেন না। কেও প্রতিবাদ করলেই তাকে ফেনসিডিল দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হতো। র্যাবের হাতে রেজাউল দালালের আটক হওয়ার খবরে কোটচাঁদপুরসহ গোটা দক্ষিনাঞ্চলে চোরাচালান সিন্ডিকেটে আতংক বিরাজ করছে বলেও একটি সুত্র জানায়। এ ব্যাপারে সোমবার দুপুরে কোটচাঁদপুর থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে একটি মামলা হয়েছে।