দেশে ভাড়ায় চলা হেলিকপ্টার কতটা নিরাপদ
কক্সবাজারের উখিয়ায় বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসান। কিন্তু তাকে নামিয়ে দিয়ে ফেরার সময় কক্সবাজারের উখিয়ার সৈকতে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির একজন আরোহী নিহত হয়েছেন, গুরুতর আহত পাইলটসহ তিনজন।
এই দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশ বেসরকারি খাতে ভাড়ায় চলা হেলিকপ্টারগুলো কতটা নিরাপদ- সে প্রশ্ন আবার সামনে এসেছে। দুর্ঘটনার শিকার হেলিকপ্টারটি মেঘনা এভিয়েশন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের।
এর অপারেশন বিভাগের পরিচালক সাইফুল আলম দাবি করেছেন, নিরাপত্তার বিষয়গুলো পরিক্ষা করার পরই হেলিকপ্টারটি যাত্রা করেছিল।তবে নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনো ত্রুটি ছিল কিনা, সেটিকে অগ্রাধিকার দিয়ে ঘটনা তদন্ত করছে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।
সাত-আটটি বেসরকার প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিকভাবে হেলিকপ্টার পরিচালনা করছে।এসব বড় বড় শিল্পগোষ্ঠী প্রথমত নিজেদের ব্যবহারের জন্য হেলিকপ্টার এনেছিল।পরে তারা হেলিকপ্টার দিয়ে ভাড়ায় যাত্রী পরিবহনের ব্যবসায় নেমেছে।
এমনই একটি প্রতিষ্ঠান ইমপ্রেস এভিয়েশন লিমিটেড এর চিফ ইঞ্জিনিয়ার বলছিলেন, “গার্মেন্টস এর বিদেশী ক্রেতা বা বায়াররা এলে তাদের কারখানা দেখানোর জন্য এখন নিয়মিত হেলিকপ্টার ভাড়া নেয়া হয়ে। এছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার,পাবনা, রাজশাহীসহ দেশের কোনো অঞ্চলে কেই হৃদরোগে আক্রান্ত হলে বা সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হলে, তাদের দ্রুত ঢাকায় আনার জন্যও পরিবারগুলো এখন হেলিকপ্টার ভাড়া করে।”
তিনি উল্লেখ করেছেন, ঘন্টায় ৭৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ভাড়া হলেও হেলিকপ্টারের চাহিদা প্রতিদিনই বাড়ছে।
রাজনীতিবিদদের অনেকে নির্বাচনী এলাকায় নিয়মিত হেলিকপ্টারে যাওয়া আসা করেন। এমন একজন প্রভাবশালী রাজনীতিক বলেছেন, নিরাপত্তা প্রশ্নে ভয় থাকলেও বাধ্য হয়ে তিনি ভাড়া করা হেলিকপ্টারে চড়েন।
চলচ্চিত্র এবং নাটক নির্মাতা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী বলছিলেন, “ঢাকার বাইরে দূরে শুটিংয়ের জন্য আমি হেলিকপ্টারে চড়ি।কিন্তু মুশকিল হলো, এটা নিরাপদ কিনা, ফিটনেস আছে কিনা-এগুলো আমাদের জানার কোনো উপায় নেই।জিজ্ঞেস করলে, পাইলট হেসে বলবে, ঠিক আছে।আসলে ভয় নিয়েই হেলিকপ্টারে চড়তে বাধ্য হই।”
নিরাপত্তা ইস্যূ যারা তদারকি করে, সেই সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা মো: আলী রেজা খান বলেছেন, হেলিকপ্টার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যবস্থা বা হ্যাঙ্গার আছে কিনা, ইঞ্জিনিয়ারিং টিম আছে কিনা, এসব অনেক শর্ত মেনে হেলিকপ্টার উড়ানোর লাইসেন্স বা অনুমতি পাওয়া যায়। তিনি দাবি করেছেন, শর্তের ব্যাপারে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ তারা নিয়মিত মনিটর করেন।