পিরোজপুরে স্ত্রীকে ভালোবাসার প্রমাণ দিতে নিজের দেহ ক্ষত-বিক্ষত করলো স্বামী
ডেস্ক রিপোর্ট: স্ত্রীকে ভালোবাসার প্রমাণ দিতে স্ত্রীর সামনে ব্লেড দিয়ে নিজের সারা শরীর ক্ষত-বিক্ষত করেছে হতভাগ্য স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার বড় শিংগা গ্রামে। ক্ষত-বিক্ষত স্বামীকে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
উভয় পক্ষের লোকজনের সাথে জানাগেছে, ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকুরী করার সুবাদে মঠবাড়িয়া উপজেলার বড় শিংগা গ্রামের দিনমজুর আ. হালিম মৃধার মেয়ে এক সন্তানের জননী রাবেয়া বেগম (২৭) ও মুন্সিগঞ্জ জেলার দক্ষিণ ইসলামপুর গ্রামের নাদের আলী সরদারের ছেলে ৪ সন্তানের জনক অটো চালক মিন্টু ওরফে সাগর (৩৫) পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
প্রেমের সম্পর্কের সফল রুপ দেয়ার জন্য প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে প্রায় সাড়ে তিন বছর পূর্বে সাগরের সাথে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। সম্প্রতি পারিবারিক কলহের জের ধরে রাবেয়া বেগম ঢাকা থেকে পালিয়ে বাড়িতে চলে আসে। বাড়িতে এসে গত ২৪ আগস্ট রাবেয়া বেগম নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে স্বামীকে ডিভোর্স পাঠিয়ে দেয়। এদিকে ডিভোর্সের খবর পেয়ে ঢাকা থেকে মঠবাড়িয়ায় চলে আসে সাগর। পরে শ্বশুর বাড়ি গিয়ে স্ত্রী সন্তানকে ঢাকায় ফিরিয়ে নিতে চায়। রাবেয়া বেগম তাকে ডিভোর্স দিয়েছে জানিয়ে তার সাথে যেতে অপারগতা প্রকাশ করে। এসময় স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে ও ভালোবাসার প্রমাণ দিতে সাগর স্ত্রীর সামনেই ব্লেড দিয়ে নিজের সারা শরীর ক্ষত-বিক্ষত করে। পরে ক্ষত-বিক্ষত শরীর নিয়ে মঠবাড়িয়া থানায় উপস্থিত হয়ে স্ত্রীকে ফিরিয়ে পাওয়ার দাবী জানায়। এসময় থানা পুলিশ তাকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ ফেরদৌস ইসলাম জানান, আহত সাগরের সারা শরীরে ব্লেড দিয়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে রাবেয়া বেগমের কাছে জানতে চাইলেন তিনি অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামী একজন মাদকাশক্ত। বিয়ের পর তার স্বামী তাকে দিয়ে অবৈধ ব্যবসা করার চেষ্টা করে। এতে সে রাজী না হওয়ায় তাকে একাধিকবার নির্যাতন করা হয়। পরে বাধ্য হয়ে ঢাকা থেকে পালিয়ে বাবার বাড়িতে এসে স্বামীকে সে ডিভোর্স পাঠায়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাগর জানায়, আমি আমার স্ত্রী ও সন্তানকে অনেক ভালোবাসি। ডিভোর্সের খবর শুনে আমি পাগলের মতো আমার স্ত্রীর কাছে ছুটে আসি। আমার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি। আমি আমার স্ত্রী সন্তানকে ভালোবাসার প্রমাণ দিতে ব্লেড দিয়ে নিজেই নিজের সারা শরীর ক্ষত-বিক্ষত করি।