রসিক নির্বাচন: ঝন্টুর বিরুদ্ধে আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ, বাবলাকে শোকজ
রংপুর সিটি কর্পোরেশন (রসিক) নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার একেএম নুরুল হুদা রংপুর সফর করচ্ছেন। তিনি বুধবার সেখানে পৌঁছান।
রসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টুর বিরুদ্ধে আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী। এদিকে বিপুল পরিমাণ নেতাকর্মী নিয়ে সভা করার অভিযোগে বিএনপি প্রার্থী কাওসার জামান বাবলাকে শোকজ করা হয়েছে।
রিটার্নিং ও রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার মঙ্গলবার রাতে শোকজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার কাওসার জামান বাবলাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রসিক নির্বাচনে প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই পুরোদমে প্রচারণায় নেমে পড়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর পদের প্রার্থীরা। পুরো সিটি কর্পোরেশন এলাকায় দেখা গেছে সাজসাজ রব। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাপার মেয়র প্রার্থীরা সভা-সমাবেশের পাশাপাশি সরাসরি ভোটারদের সঙ্গে দেখা করে ভোট চাচ্ছেন এবং সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, রসিক নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার একেএম নুরুল হুদা রংপুর সফর করচ্ছেন। তিনি বুধবার আসেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় তিনি বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় যোগ দিবেন এবং বিকেল ৩টায় জিলা স্কুল অডিটরিয়ামে প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করবেন।
এছাড়া, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বিভাগীয় কমিশনার কাজী হাসান আহমেদকে প্রধান করে ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি, বিজিবির সেক্টর কমান্ডার, রংপুর জেলা প্রশাসক, রিটার্নিং অফিসারসহ বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তা রয়েছেন।
অপরদিকে, শীর্ষ তিন রাজনৈতিক দলের মেয়র প্রার্থীরা এখনো ইশতেহার বের না করলেও ভোটারদের নিজেদের উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্পর্কে জানাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু ভোটারদের বলেছেন, জীবনের পড়ন্ত বেলায় নিজের জীবনকে জনগণের সেবায় উৎসর্গ করতে চাই। আবার নির্বাচিত হলে নগরীর কোনো এলাকা অবহেলিত থাকবে না। প্রথম মেয়র হয়ে পাঁচ বছর সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হলে অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার পাশাপাশি নগরী উন্নয়ন কাজে হাত দেব।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী মহানগর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা বলছেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশনকে একটি পরিকল্পিত আধুনিক নগর নির্মাণের স্বপ্ন দীর্ঘদিনের। নানা কাজের জন্য মানুষকে সিটি কর্পোরেশনে আসতে হয়। মেয়র নির্বাচিত হলে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের অফিস তৈরির মাধ্যমে জনগণের সব সুবিধা তাদের দোরগোড়ায় নিয়ে যাব।
বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মহানগর সহ-সভাপতি কাওসার জামান বাবলা ভোটারদের বলেছেন, আমি মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হলে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে একটি আধুনিক, পরিবেশবান্ধব ও যানজটমুক্ত নগর গড়ব। এছাড়া আমার প্রথম অগ্রাধিকার হবে বর্ধিত পল্লী এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, মূল নগরের বেহাল সড়কগুলো সংস্কার এবং যানজট নিরসন। নগরের বড় অংশের মানুষ নামেই সিটির বাসিন্দা। গত পাঁচ বছরে তারা নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। মেয়র নির্বাচিত হলে তাদের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করব।
এদিকে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টুর বিরুদ্ধে আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মহানগর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলেও জানান মোস্তফা। তিনি বলেন, ঝন্টু তার প্রচারপত্রে জাতীয় পার্টিকে ভোট না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যা স্পষ্টভাবেই নির্বাচনের আচরণ বিধি ভঙ্গ।
এ ব্যাপারে সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু বলেন, আচরণ বিধি ভঙ্গের মতো কোনো কাজ আমি করিনি। নিয়মনীতি মেনে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।
রিটার্নিং ও রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার বলেন, এখনো আমার হাতে কোনো অভিযোগ এসে পৌঁছেনি। অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। কেউ আইন ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।