শনিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, পশ্চিম গুয়াতেমাতেমালার মায়ান সভ্যতার আদিবাসীদের সঙ্গে ধর্মীয় বিরোধের কারণে তাদের হুমকি মুখে একটি গ্রামের ২৩০ জন ইহুদি বাসিন্দা বাসস্থান ছেড়েছেন।
অর্থোডক্স লেভ তাহুর (পবিত্র আত্মা) সম্প্রদায়ের ইহুদিরা ওই ধর্মের প্রাচীন রীতিনীতির কঠোর অনুসারি। দীর্ঘ সময় ধরে রোযা পালন, নির্দিষ্ট পোশাক পরিধানসহ আরো কিছু স্বতন্ত্র ধর্মীয় প্রথা কঠোরভাবে অনুসরণ করে থাকেন তারা।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ছয় বছর আগে অন্য এলাকা থেকে পশ্চিম গুয়াতেমালার সান জোয়ান লা লাগোনা গ্রামে বসতি গেড়েছিলেন সদ্য বিতাড়িত ইহুদিরা। তাদের কেউ কেউ মাত্র এক বছর আগে কানাডার একটি জনপদ থেকে বিতাড়িত হয়ে এখানে এসেছিলেন।
ছোট্ট এই ইহুদি গোষ্ঠীটি গ্রামবাসীদের এড়িয়ে চলতেন এবং নিজেদের বিশ্বাস ও রীতিনীতি সাধারণ মানুষের ওপর চাপিয়ে দিতেন বলে অভিযোগ মায়ান গ্রামপ্রশাসনের।
সে কারণে নিজেদের সভ্যতা সাংস্কৃতি রক্ষায় ইহুদিদের গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রাচীন মায়া সমাজের প্রবীণরা।
গত কয়েকদিন ধরে ইহুদিরা ধীরে ধীরে গ্রাম ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। রাজধানী গুয়াতেমালা সিটি থেকে দেড়শ মাইল পশ্চিমের ওই গ্রাম থেকে মালগাড়ি বোঝাই আসবাবপত্র নিযে অনেক ইহুদি পরিবারকে চলে আসতে দেখা যায়।
লেভ তাহুর সম্প্রদায়ের সদস্য মিশেল সেন্টোস গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এড়ানোর স্বার্থে গ্রাম ছেড়ে যাচ্ছি।
“এই গ্রামে থাকার অধিকার আমাদের আছে। কিন্তু গ্রাম ছেড়ে না গেলে আমাদেরকে হত্যা করার হুমকি দিচ্ছে তারা,” বলেন সেন্টোস।
গ্রাম ছেড়ে না গেলে বাসস্থানের পানি-বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়া হবে বলেও হুমকি দেয়া হয় ইহুদিদেরকে।
তবে গ্রামের প্রবীণদের অভিযোগ, ইহুদিরা গ্রামবাসীদের ওপর নিজেদের ধর্মবিশ্বাস চাপিয়ে দিতে চায়। গ্রামের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী ক্যাথলিক বিশ্বাসে চিড় ধরানোর চেষ্টা করে তারা।
প্রবীণ কাউন্সিলের (ইল্ডার কাউন্সিল) মুখপাত্র মিগুয়েল ভাসকুয়েজ বলেন, “আদিবাসীদের অধিকার সংরক্ষণে, নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় আমরা কাজ করেছি। গুয়াতেমালার সংবিধানই প্রাচীন সংস্কৃতি রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে।”
তবে গ্রাম ছাড়লেও গুয়াতেমালার অন্য কোথাও বাসস্থান চান অতিরক্ষণশীল এই ইহুদিরা।