বিশেষ নিবন্ধ
তারাবির টাকা আদায়ের নামে চলছে নীরব চাঁদাবাজি
লেখকের ফেইসবুক পেজ থেকে
গত কাল পরিচিত এক দোকান মালিক বললেন, ‘তারাবির চাঁদা নাকি দিতেই হবে। তিনশ টাকা নিয়ে গেল। যাদেরকে কালেকশান করতে পাঠানো হয়েছে তারা মহল্লার সেই সমস্ত কীর্তিমান ছেলেপেলে যাদেরকে টাকা না দিয়ে উপায় নেই। শুধু তারাবি না, বিভিন্ন দিবস উপলক্ষ্যেও এরকম চাঁদা নিতে আসে এরা। না দিলে কী পরিস্থিতি হবে সেটা তাদের আচরণেই পরিষ্কার বুঝিয়ে দেয়।’
আজকে খবর পেলাম গ্রামেও নাকি জবরদস্তিমূলকভাবে টাকা আদায় চলছে। যারা তারাবি পড়েন নাই বা অন্য মসজিদে পড়েছেন তাদেরকেও এই চাঁদা দিতে হচ্ছে। হায়রে ইসলাম, হায়রে ইমামতি, হায়রে হাফেজে কোর’আন, হায়রে তারাবি।
কে ইসলামের সম্মান রক্ষা করবে যখন ধর্মের ধ্বজাধারীরাও একে লুটেপুটে খাচ্ছে। যেখানে শরিয়তে অসংখ্য দলিল আছে যে কোর’আন খতমের বিনিময় নেওয়া জায়েজ নয়, খতম তারাবির টাকা লেনদেন হারাম সেখানে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা তুলে ইমাম সাহেব, হাফেজ সাহেব, মসজিদ কমিটি ভাগাভাগি করে খাচ্ছে।
এই আদায়কাররা একটা কথার জবাব দিবেন কি? আপনারা হারাম হালাল তো বুঝবেন না, আপনাদের চাঁদাবাজিতে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপনারা চাদা যদি নিতেই চান তবে যারা ঐ নিয়োজিত ইমামের পেছনে নামাজ পড়েছে তাদের থেকে নেন। গড় পড়তায় বাজারে গিয়ে দোকান থেকে, বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার থেকে টাকা তুলবেন এ কেমন কথা?
এমন বহু উপায়ে ধর্মব্যবসায়ীদের দ্বারা ধর্মের ঘাড়ে কাঁঠাল ভেঙে খাওয়া আর কতকাল চলবে? আপনারা তো সবই শেষ করে দিলেন, ইসলাম ধ্বংসের আর কী বাকি রেখেছেন ধর্মব্যবসায়ীরা? আপনাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই তো শুরু করবেন ফতোয়াবাজী- মুরতাদ, কাফের, ইহুদি, খ্রিষ্টান ইত্যাদি ইত্যাদি।
মানুষ আল্লাহকেও ভয় পায় না, যতটুকু ভয় পায় ধর্মব্যবসায়ীদের। সমাজের মানুষগুলো এখন অন্ধ-বোবা-কালা হয়ে গেছে। শুধু এটুকু বলি, সমাজের মানুষগুলো যদি এখনও সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী না হয়, তাহলে বেশিদিন চাকরি বাকরি, ব্যবসা বাণিজ্য করে খাওয়া লাগবে না। প্রশ্রয়প্রাপ্ত অন্যায়গুলো দানবাকৃতি হয়ে সবাইকে গ্রাস করে ছাড়বে।
হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম -এমাম, হেযবুত তওহীদ