Connecting You with the Truth

ন্যূনতম মজুরি দিতে না পারলে ব্যবসা ছাড়–ন -শ্রম প্রতিমন্ত্রী

labour ministryস্টাফ রিপোর্টার:
শ্রমিকদেরকে ন্যূনতম মজুরি দেয়ার পর মুনাফা না হলে চিংড়ি ও মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানা মালিকদের ব্যবসা ছেড়ে দিতে বললেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক চুন্নু। প্রস্তাবিত ন্যূনতম মজুরি দিলে দেশের সব চিংড়ি ও মৎস প্রক্রিয়াকরণ কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে- গতকাল রাজধানীতে এক গোলটেবিল বৈঠকে এমন কথা ওঠায় প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। তবে কারখানা মালিকরা তাদের সমস্যা জানালে সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেয়ারও আশ্বাস দেন চুন্নু। রাজধানীর একটি হোটেলে চিংড়ি ও মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার আয়োজক ছিল সলিডারিটি সেন্টার ও সোস্যাল অ্যাক্টিভিটিজ ফর দ্য এনভায়রনমেন্ট। শ্রম প্রতিমন্ত্রী চুন্নু বলেন, “সরকার কোথাও জোর করে ন্যূনতম মজুরি চাপিয়ে দেবে না। মালিক-শ্রমিক আর স্টেক হোল্ডাররাই এটা ঠিক করবেন।” মজুরি নিয়ে আলোচনার জন্য মালিকদের সরকারের কাছে আসা উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমার কাছে আপনারা আসতে পারতেন। বলতেন যে, আমরা শ্রমিকদেরকে ন্যূনতম মজুরি দিতে চাই। দরকার হলে আপনাদের কমার্স মিনিস্ট্রিতে নিয়ে যেতাম। প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যেতাম।” খুলনা শ্রমিক লীগের সভাপতি বিএম জাফর বলেন, “দুই সন্তানের একটি পরিবার নিয়ে বাঁচতে আমাদের একজন শ্রমিককে মাসে ১২ হাজার ৬০০ টাকা দিতে হবে।” এর জবাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন বলেন, “গড়পড়তা একটি পরিবারের খরচের জন্য ২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী ১১ হাজার ২০০ টাকা দিতে হয়। “২ হাজার ১২২ ক্যালোরি হিসাব করেও যদি তাদেরকে বেতন দিতে চান, তাহলেও ৭ হাজার ৬৬৭ টাকা দরকার হয়। তবে কর্মজীবী মানুষ হিসাবে কিন্তু তাদের প্রয়োজন হয় ২ হাজার ৪০০ ক্যালোরির মতো। সেক্ষেত্রে এটা আরো বেড়ে যায়।” এ প্রসঙ্গে কারখানা মালিকদের উদ্দেশ্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আপনারা হিসাব করছেন চার জনকে নিয়ে। পরিবারে তো আরো দুইজন আছে। মা-বাবাকে বাদ দিলেন কেন? আমরা তো আইন করে দিয়েছি, মা-বাবাকেও খাওয়াতে হবে। “মা-বাবাকে না খাওয়ালে সেটা ফৌজদারি অপরাধ। তাই সব হিসাবে তাদেরকেও আনতে হবে।” আওয়ামী লীগ সরকারের আগের মেয়াদের শেষ দিকে গত বছরের অক্টোবরে পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ বিল ২০১১ পাস হয় সংসদে। মা-বাবার ভরণ-পোষণ না দিলে সন্তানের ২ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা অর্ধ দণ্ডসহ অনাদায়ে অনূর্ধ্ব তিন মাসের কারাদণ্ডের বিধান করা হয়েছে। আলোচনায় মালিকদের পক্ষ থেকে আমান ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস হুমায়ূন কবীর বলেন, “ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে যদি কোনো ভুল করে ফেলি, তাহলে মালিকরা পালিয়ে চলে যাবে। ১৬৬টা কারখানা হয়েছিল। অনেকেই চলে গেছে।” সভায় কয়েকবার শ্রমিক-মালিকদের মধ্যে হৈ-চৈয়ের ঘটনা ঘটে। পরে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি এম খলিল উল্লাহ ন্যূনতম মজুরি দেয়ার আশ্বাস দিয়ে এ শিল্পের সমস্যা দূর করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমরা শ্রমিকদেরকে ১২ হাজার টাকা বেতন দেবো। আপনারা এই শিল্পের সমস্যা দূর করেন। এখানে ২-৫ ভাগ বেতন দেয়া হয়। কিন্তু দুর্নীতি হয় ১০ ভাগ। এটা বন্ধ করুন।”

Comments
Loading...