বেরোবিতে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সিসি ক্যামেরা,পুলিশ পাচ্ছে সর্বোচ্চ ক্ষমতা
তপন কুমার রায়,বেরোবি সংবাদদাতাঃ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধীদের সনাক্ত করা সহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ও বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাস ভবনে লাগানো হচ্ছে ১৬ টি সিসি ক্যামেরা। এদিকে একই সাথে ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতির যেন অবনতি না হয় সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বেশ কিছু কঠোর নিয়ম চালুর ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে চলছে। গতকাল সোমবার উপাচার্য প্রফেসর ড. একে এম নূর-উন-নবীর সভাপতিত্বে সকল বিভাগীয় প্রধান ও ডীনদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ে এক সভার সিদ্ধান্ত অনুযারী ক্যাম্পাসের ভিতরে কেউ হাতে যেকোন ধরনের অস্ত্র বহন করলে দেখা মাত্র পুলিশ তাদেকে গ্রেফতার করতে পারবে। এতে কাউকে জববদিহিতা করতে হবে না বলে জানা গেছে। উলেখ্য যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে আইন শৃঙ্খলা বিষয়টি প্রক্টরিয়াল বডির দ্বারা মূলত পরিচালিত হয় এবং গত ২৫ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একাংশ পুলিশের সামনে অস্ত্র মহড়া দিলেও পুলিশ কোন বাধা দেননি বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক কালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক মারপিট, সংঘর্ষ, বিভিন্ন দফতরে ছাত্রসংগঠনের চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘঠিত হয়েই চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ টির মতো ছোট বড় এধরণের ঘটনা ঘটেছে। এর জন্য ১২ টির মতো তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু কোন তদন্তের ফলাফল আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আর এর মূল কারণ হিসাবে তদন্ত কমিটির সদস্যরা বলছেন শক্তিশালী তেমন কোন প্রমাণ না পাওয়া। আর এসব অপরাধকে নিয়ন্ত্রণ করতেই ক্যাম্পাসে বসানো হচ্ছে ১৬ টি সিসি ক্যামেরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের প্রধান মোহাম্মদ আলী বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে লাগানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। যাতে সিসি ক্যামেরা থেকে সংগৃহীত ফুটেজ থেকে অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায়।
তিনি আরো বলেন, যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এ ধরনের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বেশি তাই আপাতত প্রশাসনিক ভবন ও উপাচার্যের বাস ভবনে এসব সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে।
সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরে হামলার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটিও খুঁজছে শক্তিশালী প্রমাণ। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় যদি কোন প্রমাণ আমরা খুঁজে না পাই তবে অভিযোগ আমলে নেওয়া সম্ভব হবে না। জনসংযোগ দপ্তরে হামলার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে তথ্যানুসন্ধানের জন্য এক জরুরি বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা করেছে। গতকাল সোমবার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে উক্ত ঘটনার বিবরণ,কারণ,শৃঙ্খলা-ভঙ্গকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ সম্পর্কে কোন তথ্য ও ঘটনা সংশ্লিষ্ট প্রমাণাদি যেমনঃ ঘটনার ভিডিও, স্থিরচিত্র, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের কার্টিং ইত্যাদি বিষয়ে লিখিত বক্তব্য আগামী ০৫(পাঁচ) কর্মদিবসের মধ্যে তথ্যানুসন্ধান কমিটির আহ্বায়কের নিকট জমা দিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রশাসনিক ভবনে ৮ টি ও উপাচার্যের বাস ভবনে ৮টি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। কাজ শেষ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন ক্যামেরা বসানো ইতোমধ্যে শেষ।
আরো জানা যায় উপাচার্যের অফিসকক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরাগুলো নিয়ন্ত্রিত হবে।অফিসে বসে উপাচার্য সবার গতিবিধি লক্ষ করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোর্শেদ উল আলম রনি বলেন, নিশ্চয়ই এধরনের উদ্যোগ অনেক ভালো। এতে কেউ অপরাধ করতে ভয় পাবে এ জায়গাগুলোতে। হাতে অস্ত্র দেখা মাত্র গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিক ভাবে গ্রেফতারের বিষয়টিসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আরো ভালো ভাবে পর্যালোচনা করে দেখা হবে।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর